বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক বা ই–পাসপোর্টের যুগে প্রবেশ করেছে। ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে ই–পাসপোর্ট চালু করেছে বাংলাদেশ। এখন যে কেউ ঘরে বসে নিজেই নিজের ই–পাসপোর্টের আবেদন করতে পারবেন। সেজন্য জানতে হবে আবেদন করতে করার নিয়ম, খরচ এবং ইত্যাদি বিষয়।
কেননা, একটি ই–পাসপোর্ট আবেদন জমা দেওয়ার (সাবমিট করা) পর যদি দেখেন, কোথাও ভুল হয়েছে, তাহলে আপনি তা সংশোধন করার সুযোগ পাবেন না। সেইসঙ্গে, একটি ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে একবারই আবেদন করা যায়।
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম:প্রথমে অনলাইনে আবেদন করার জন্য বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট এপ্লিকেশন পোর্টাল ওয়েবসাইট (www.epassport.gov.bd) ভিজিট করুন এবং মেনু থেকে এপ্লাই অনলাইন (Apply Online) অপশনটি বাছাই করে, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং থানা নির্বাচন করুন। একটি সচল ই-মেইল এড্রেস এবং নিজের ব্যক্তিগত তথ্যসহ পিতা-মাতার তথ্য ও জরুরী যোগাযোগের ঠিকানা পূরণ করতে হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ এবং ডেলিভারি ধরন নিশ্চিত করে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।ই-পাসপোর্ট করতে যা যা লাগে:ই-পাসপোর্ট অনলাইনে আবেদন করার জন্য কোনো কাগজপত্র আপলোড করতে হয় না। তবে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই করতে কিছু কাগজপত্র চেয়ে থাকেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—১। জাতীয় পরিচয়পত্র / অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ ২। আবেদন সারসংক্ষেপ বা সামারী ৩। পূর্ববর্তী পাসপোর্টের ফটোকপি ও অরিজিনাল পাসপোর্ট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ৪। ই-পাসপোর্ট আবেদন কপি ৫। ইউটিলিটি বিলের কপি (গ্যাস/বিদ্যুৎ) ৬। পিতা-মাতার NID কার্ডের কপি (শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যিক) ৭। নাগরিক সনদ / চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ৮। পেশাজীবী প্রমাণপত্রই-পাসপোর্ট ফি:বাংলাদেশি আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সাধারণ (২১ কর্মদিবস) ফি ৪ হাজার ২৫ টাকা, জরুরি (১০ কর্মদিবস) ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা ও অতীব জরুরি (২ কর্মদিবস) ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, জরুরি ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের জন্য সাধারণ ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, জরুরি ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২ হাজার ৭৫ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা, জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১৩ হাজার ৮০০ টাকা। সব ফির সঙ্গে যুক্ত হবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। ১৮ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীরা কেবলমাত্র ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট পাবেন। অতি জরুরি আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন সঙ্গে আনতে হবে।ই পাসপোর্টের সুবিধাসমূত্র:ই-পাসপোর্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এর মাধ্যমে ই-গেট ব্যবহার করে খুব দ্রুত ও সহজে ভ্রমণকারীরা যাতায়াত করতে পারবেন। ফলে বিভিন্ন বিমানবন্দরে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এর মাধ্যমেই ইমিগ্রেশন দ্রুত হয়ে যাবে। ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। থাকবে আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের ব্যবস্থাও। সব ঠিক থাকলে তিনি ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন। কোনো গরমিল থাকলে জ্বলে উঠবে লালবাতি। কারও বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলে, সেটিও জানা যাবে সঙ্গে সঙ্গে।