নিজস্ব প্রতিবেদক॥ আর মাত্র ২৪ দিন বাকি। ২৫ জুন চালু হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে পদ্মার দুই তীরে চোখ ধাঁধানো আয়োজন চলছে। জম কালো এই আয়োজনের জন্য সরকার ১৮ টি উপ-কমিটি করেছে। প্রতিটি কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। দেশের এমন একটি স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিন ক্ষণ নির্ধারিত হওয়ার পর থেকেই জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজনের কাজ চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বড় বড় প্রকল্প গুলোর মধ্যে পদ্মা সেতু একটি। এই অর্জন দেশের উন্নয়নকে আরও উচুতে নিয়ে যাবে। তাছাড়া সারা দেশে ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং পদ্মা সেতুর উদ্বোধন যুগপৎভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সরকারের মূল আয়োজন থাকবে পদ্মার দুই তীরে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কাজ চলছে। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ৪০ ফুট উচ্চতার দুটি ম্যুরাল নির্মাণ করা হচ্ছে। দুটি ম্যুরালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি থাকবে। ম্যুরালের পাশে থাকবে উদ্বোধনী ফলক।
সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে পদ্মা সেতুতে আলোর মালা জ্বলবে। সেতুতে মোট ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্ট রয়েছে। সেতুর দুই পাড়ে রয়েছে আরও প্রায় ২ শ’ ল্যাম্পপোস্ট । সেতুর দুই পাড়ে স্থাপিত বিদ্যুতের উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেয়া হয়েছে। ল্যাম্পপোস্টগুলোয় প্রতিটি বাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষার কাজ দু’ একদিনের হবে। এরপর থেকে রাতে পদ্মা সেতুতে আলোর মালা জলবে।
২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। সুধী সমাবেশ শেষে তিনি গাড়িতে চড়ে সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে আরেকটি উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। গত কয়েক দিন ধরে সেতু এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে খুবই জমকালো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ৬৪ টি জেলায় লাইফ সম্প্রসারণ হবে। এ কাজটিও করার জন্য ডিসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সেতু বিভাগ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে ১৮টি উপকমিটি গঠন করেছে। কমিটি গুলো কমিটি প্রায় প্রতিদিনই বৈঠক করছে। প্রতিটি কমিটির যে যে কাজ রয়েছে তা করে যাচ্ছে। আমন্ত্রণ কার্ডের নকশা ও সজ্জার কাজ শুরু করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও প্রদর্শনী থাকবে। অতিথিদের দেওয়া হবে উপহার-স্যুভেনির। অতিথিদের মাওয়া ও জাজিরা—দুই পাড়েই আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া করোনাকালে স্বাস্থ্য সুরক্ষা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য দুই পাড়েই একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য পদ্মা সেতুর মূল দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। দুই তীরে উড়ালপথ (ভায়াডাক্ট) রয়েছে ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে সেতুর দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের শেষ দিকে মূল সেতু ও নদীশাসনের কাজ শুরু হয়। এর আগে সংযোগ সড়ক, টোলপ্লাজা নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে। আগামী ২৫ জুন থেকেই টোলপ্লাজা পার হয়েই দক্ষিণ বঙ্গে সব ধরণের পরিবহন চলাচল শুরু হবে। দেশের ইতিহাসে যোগ হবে আরও একটি প্রাপ্তি।