স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংস থেমেছে ১৫২ রানে। আর তাতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ৩৩৪ রানের। যা করতে হলে রেকর্ডই করতে হবে টাইগারদের। এর মধ্যে মাত্র ২৩ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) অ্যান্টিগাতে ৩৩৪ রানের টার্গেট ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১ রানেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগেই কেমার রোচের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান জাকির হাসান। তার বিদায়ের পর পরই সাজঘরের পথে ধরেন আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়।
দলীয় ৭ রানে ১০ বলে ৬ রান করে আউট হন তিনি। তার বিদায়ের পর শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন মুমিনুল হক শাহাদত হোসেন দিপু। তবে দলীয় ২৩ রানে মধ্যে আরও দুই উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দিপু ২২ বলে ৪ ও মুমিনুল ৩৬ বলে ১১ রান করে আউট হন। এই দুই ব্যাটারের বিদায়ের পর মেহেদী হাসান মিরাজ ও লিটন দাস প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন।
এদিকে আলোক স্বল্পতায় ১০ ওভারের মতো বাকি থাকতেই চতুর্থ দিনের খেলার ইতি টানেন আম্পায়াররা। এরমধ্যে ৩১ ওভার শেষে ৭ উইকেটে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১০৯ রান। জাকের অপরাজিত ৪৫ রানে, হাসান ৬ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন রোচ ও সিলস। অন্য উইকেটটি শামার জোসেফের। শেষ দিনে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার আরও ২২৫ রান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন তিন উইকেট।
এর আগে টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদের তোপের মুখে পড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। দিনের শুরু থেকেই এই পেসার তুলে নিতে থাকেন একের পর এক উইকেট। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট তুলে নেন তিনি। তাসকিনের উইকেট-পার্টিতে যোগ দেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামও।
এর আগে রোববার তৃতীয় দিন শেষে ৯ উইকেটে ২৬৯ রান ছিল বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে। হাতে ছিল এক উইকেট। বাংলাদেশ তখনও ১৮১ রানে পিছিয়ে। তবে চতুর্থ দিনে আজ (সোমবার) সকালেই সবাইকে চমকে দেয় বাংলাদেশ। পিছিয়ে থেকেই ইনিংস ঘোষণা করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ইনিংস ঘোষণার ‘সাহসী’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অবশ্য বল হাত দিনের প্রথম সেশনটা নিজেদের করে নেয় টাইগার বাহিনী।
দিনের শুরুতেই উইন্ডিজকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাসকিন। মিকাইল লুইস আর কেসি কার্টিকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন দুই অঙ্কে যাওয়ার আগেই। এরপরও শরিফুল ইসলাম ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে ফেরান। মাঝে ৫০ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে চোখরাঙানি দিচ্ছিলেন আলিক এথানেজ আর কেভাম হজ। হজকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে আবারও ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন।
মিরাজ ফেরান ইনিংস সর্বোচ্চ ৪২ রান করা এথানেজকে। একটু পর প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান জাস্টিন গ্রিভসকে যখন তাসকিন সাজঘরে ফেরালেন, উইন্ডিজের রান তখন ৯৩, নেই হয়ে গেছে ৬টি উইকেট।
জশুয়া সিলভা একটা প্রতিরোধের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে তাকে বড় কিছু করার আগেই ফেরান তাইজুল। এরপর আলজারি জোসেফও ১৭ রানের ছোট্ট এক ইনিংসে দলের স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন আরও কিছু রান, তাকে ফেরান মিরাজ।
শামার জোসেফকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার তুলে নেন তাসকিন। একটু পর কেমার রোচকেও তিনি ফেরালে উইন্ডিজ অলআউট হয় ১৫২ রানে। শেষ পর্যন্ত টাইগার বোলারদের তোপে ১৫২ রানেই শেষ হয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ রান করেন অলিক আথানজি। আর তাসকিনের ৬ উইকেট ছাড়া মিরাজ শিকার করেন ২ উইকেট। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম।