Search
Close this search box.

খেলাপি ঋণ ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশাল ছাড়

খেলাপি ঋণ ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশাল ছাড়

মলয় বিকাশ দেবনাথ ॥ বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণখেলাপিদের বিশাল ছাড় দিয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে । কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই বিশাল ছাড়ের পর আরও ছাড় চায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে এখন আড়াই থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ অর্থ জমা দিলেই চলবে। আগে যা ছিল ১০ থেকে ৩০ শতাংশ। এখন পাঁচ থেকে আট বছরে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। এ জন্য আগে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় দেওয়া হতো। আবার নতুন করে ঋণও মিলবে। এতে ঋণ আদায় না বাড়লেও সাময়িকভাবে খেলাপি ঋণ কমবে।

বৃহস্পতিবার সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা মনে করি, সব শ্রেণির ঋণগ্রহীতার জন্য সমসুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ, সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।’ এছাড়া বৃহৎ ও ক্ষুদ্র সব শ্রেণির ঋণগ্রহীতার মেয়াদি, চলমান ও তলবি ঋণ গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ মেয়াদ ৮ বছর নির্ধারণের অনুরোধ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি ন্যূনতম ডাউনপেমেন্টের হার সব ক্ষেত্রে আড়াই শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন। চিঠিতে মো. জসিম উদ্দিন আরো উল্লেখ করেছেন, ‘করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটকে বিবেচনায় নিয়ে ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা শর্তসাপেক্ষে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায়ীদের ওপর ব্যাপক অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হওয়ায় তাঁদের শর্ত সাপেক্ষে সুবিধাটি নেওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা গ্রহণের জন্য কিস্তির ন্যূনতম পরিমাণ পরিশোধের শর্ত শিথিল করে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি (সিএমএসএমই) ও কৃষি খাতের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ এবং বড় শিল্পের জন্য সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ নির্ধারণের জন্য আমরা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করেছি। বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনার আলোকে, পাঁচশ কোটি টাকার বেশি অংকের ঋণখেলাপি হলে চার দফায় মোট ২৯ বছরের জন্য পুনঃতফসিল করা যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ৮ বছর করে পুনঃতফসিল করতে পারবে ব্যাংক। ১০০ কোটি টাকার বেশি থেকে ৫০০ কোটি টাকার কম ঋণে প্রথম দুই দফা ৭ বছর করে চার দফায় ২৫ বছরের জন্য পুনঃতফসিল করা যাবে। আর ১০০ কোটি টাকার কম ঋণে প্রথম দুই দফা ৬ বছর করে চারবারে ২১ বছর করা যাবে। আর চলমান ও তলবি ঋণ পুনঃতফসিলেও ঋণের পরিমাণ অনুযায়ী প্রথম দুই দফা ৫, ৬ ও ৭ বছর নির্ধারিত হবে। পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে যত ছোট ঋণ তত বেশি ডাউনপেমেন্ট। এ ক্ষেত্রে ডাউনপেমেন্টের হার হবে মোট বকেয়ার আড়াই শতাংশ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ।

এফবিসিসিআইর চিঠিতে বলা হয়েছে, ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনের নতুন নীতিমালা বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে। ব্যবসায়ীদের জন্য সার্কুলার জারি করে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য তিনি নতুন গভর্নরকে ধন্যবাদও দিয়েছেন চিঠিতে।
তবে সব শ্রেণির ঋণগ্রহীতাদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি। কেননা সবাই একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এফবিসিসিআই এর দেওয়া চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ায় আব্দুর রউফ তালুকদারকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান জসিম উদ্দিন। তিনি লেখেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে আপনি দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। গভর্নর হিসেবেও আপনি সফল হবেন বলে আমরা আশাবাদী।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ