স্টাফ রিপোর্টার : ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শান্তিতে নোবেলজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শ্রমিকদের টাকা নয়ছয় করেছেন। এই অভিযোগে, ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের ৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। বৃহস্পতিবার দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি আরও জানান, প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের জন্য বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনে স্থানান্তরের অভিযোগ রয়েছে গ্রামীন টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে। এরআগে শ্রমিকেদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে দুদকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয় শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত প্রতিষ্ঠান কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তর। অভিযোগে বলা হয়, ১৯৯৬ সাল থেকে গ্রামীণ টেলিকমের যে সব লেনদেন হয়েছে, তার বেশিরভাই সন্দেহজনক।
এরআগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিলের আবেদনের ওপর চূড়ান্ত শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১১ আগস্ট শুনানী অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সোমবার বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির দিন ঠিক করে এই আদেশ দেন।
আদালতে, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর, ড.ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর, ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে, ড. ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। ড. ইউনূস ছাড়াও, এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে মামলায় বিবাদী করা হয়।
মামলায়, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায়, শ্রম আইনের ৪ এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরে, মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দিয়েছিলেন। এরপর, রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। ঐ আবেদনের শুনানি নিয়ে, ১৩ জুন মামলা বাতিলে জারি করা রুল, দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়া হয়। এই সময় পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলে উল্লেখ করেন আদালত।
এ অবস্থায় বুধবার মামলার বাদীপক্ষ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে, এ বিষয়ে পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। পাশপাশি দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করা সংক্রান্ত আপিল বিভাগের আদেশও উপস্থাপন করা হয়। এ আবেদনের ওপর সোমবার শুনানি হয়।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, “ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে মামলাটি হাইকোর্ট স্থগিত করেছিলেন,সেটা সুপ্রিম কোর্টের যাওয়ার পরে, সুপ্রিম কোর্ট দুই মাসের মধ্যে বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চকে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এখানে কলকারখানা অধিদপ্তরের পক্ষে যিনি মামলাটি দায়ের করেছিলেন, সেই রুল থাকা অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। এখন যিনি এই মামলার দায়িত্বে আছেন তার পক্ষে, মামলাটি পরিচালনার জন্য একটি দরখাস্ত দাখিলের অনুমতি চেয়েছিলাম। আর আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি যেহেতু আপিল বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে দুই মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার জন্য। সেই আদেশের অনুলিপি আমরা আদালতের কাছে দাখিল করেছি।” আদালত বুধবার হলফনামা করার জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন। সোমবার মামলাটি তালিকায় আসার পর, রুল শুনানির জন্য ১১ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়। এখন দুদক অনুসন্ধান শুরু করেছে।