স্টাফ রিপোর্টার \ ‘মানুষই প্রকৃতিকে ধ্বংস করছে। ঢাকা শহরের গাছপালা কেটে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। অবশিষ্ট যে অল্প কিছু গাছপালা রয়েছে সেগুলো আর কাটা যাবে না। কিছুদিন আগেও বনানীতে গাছপালা কেটে ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেছে। আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে সেই নির্মাণ কাজ বন্ধে পদক্ষেপ নিয়েছি। দয়া করে কেউ ঢাকা শহরের গাছপালা ধ্বংস করবেন না’
রবিবার দুপুরে আহছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অভ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে আয়োজিত “Climate Change and Environment Degradation: Call for Transformative Changes” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ওয়াসা থেকে খালগুলো বুঝে পাওয়ার পর আমরা সেগুলো উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছি। মোহাম্মদপুরের বছিলায় লাউতলা খালে অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ড ছিল, বহুতল মার্কেট ছিল। সেগুলো উচ্ছেদ করে আমরা লাউতলা খাল উদ্ধার করেছি। খালে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করেছি। সেখানে এখন নৌকা চলছে। তবে খাল পরিষ্কার করতে গিয়ে আমরা খাল থেকে জাজিম, বস্তা, ডাবের খোসা, পুরনো টেলিভিশন, চেয়ার, টেবিলসহ এমন কিছু নেই যা পাইনি। এভাবে খালগুলো নোংরা হচ্ছে এবং ভরাট হচ্ছে। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।’
প্রকৃতির বিরুপ আচরণের জন্য মানুষই দায়ী উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘ময়লা ফেলে, পয়ঃবর্জ্য ফেলে ঢাকা শহরের খালগুলোকে দূষিত করা হয়েছে। খালগুলোতে এখন আর মাছের চাষ করা যায় না বরং মশার চাষ হয়। প্রকৃতিকে ধ্বংস করার কারণে, দূষণের ফলে প্রকৃতি এখন প্রতিশোধ নিচ্ছে।’
বাড়ির মালিকদের নিজেদের ভবনে অ্যাট সোর্সে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থার আহবান জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘সবাই যদি নিজেদের বাড়িতে অ্যাট সোর্সে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে পারি তাহলে শহরের পরিবেশ ঠিক থাকবে, খালের পানিও পরিষ্কার থাকবে। পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়তে সবার সচেতনতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন।’
এসময় তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানিগুলো বালু ভরাট করে অনেক খাল বেদখল করে ফেলেছে। প্লট বিক্রির সময় তারা নকশায় খেলার মাঠ ও বাজার দেখিয়েছে। জায়গার দাম বাড়ায় তারা খেলার মাঠ ও বাজারও প্লট আকারে বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা রাজউকের সাথে আলাপ করেছি। রাজউকের অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী সেই মাঠ ও বাজার উদ্ধার করবো। জনগণকে এগুলো ফিরিয়ে দিতেই হবে।’
মেয়র আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরকে বাঁচাতে হলে পরিবেশ দূষণ কমাতে হবে। শহরের স্কুলগুলোতে স্কুল বাস চালু করতে হবে। এর ফলে প্রাইভেট গাড়ির ব্যবহার কমে যাবে। স্কুল বাস সার্ভিস চালু হলে পরিবেশ দূষণ কমবে, যানজট কমবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক বন্ধনও সুদৃঢ় হবে।
আহছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অভ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি’র উপাচার্য মুহাম্মদ ফাজলী ইলাহীর সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যান্যের সাথে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম।