মিথুন আশরাফ – বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার আজ লড়াই হবে। শারজায় বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টায় ম্যাচটি শুরু হবে। এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে এই ম্যাচ দিয়েই বাংলাদেশের মিশন শুরু হবে। ম্যাচটি যদি বাংলাদেশ জিতে, তাহলে ২ পয়েন্ট যোগ হবে। তাতে করে সুপার-৪ এ ওঠার লড়াইয়ে একটু এগিয়ে থাকবে। আর যদি আফগানিস্তান ম্যাচটিতে জিতে, তাহলে তাদের সুপার-৪ এ খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। একরকম লঙ্কানদের উড়িয়ে দিয়েছে। বোলিংয়ে দাপট দেখানোর পর ব্যাটিংয়েও দাপট দেখিয়েছে। টি-টোয়েন্টি বলে কথা। আফগানরা এই ফরমেটে ভয়ংকর দল। এই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই খেলতে নামবে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানকে নিয়ে আতঙ্ক থাকছেই। তবে জয়ের আশাও থাকছে। যদিও টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তান যতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠছে, বাংলাদেশের অবস্থা সেই তুলনায় ভালো নয়। টি-টোয়েন্টিতে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং ম্যাচ বের করা বাংলাদেশের কাছে যেন এখনও কঠিন পথই। তবে আফগানদের হারানোর আশা আছে। সেই আশা নিয়েই আজ নামবে বাংলাদেশ।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় কী সম্ভব? আফগানিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। এ বছর মার্চে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। এরপর দুই দল আবার আজ লড়াই করবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে লড়াই করে মাত্র তিনটি ম্যাচে জিততে পেরেছে বাংলাদেশ। পাঁচটিতেই হেরেছে। আবার এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১০৫ রানেই অলআউট করে দিয়ে ১০.১ ওভারেই ৮ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে আফগানিস্তান। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, কতটা ভয়ংকর আফগানিস্তান। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে আফগানিস্তানকেও।
এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার এবারই প্রথম লড়াই হবে। এরআগে যখন ২০১৬ সালে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ফরমেটে এশিয়া কাপ হয়েছে, তখন আফগানিস্তান খেলতেই পারেনি। এবার প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ফরমেটের এশিয়া কাপে খেলছে আফগানিস্তান। প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করেছে। তবে আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে বোঝা যাবে, আফগানিস্তান কতটা শক্তিশালী দল।
আফগানিস্তানের পেসার ফজল হক ফারুকী আছেন। স্পিনে রশিদ খানতো আছেনই। সাথে স্পিনার মুজিব জাদরান, মোহাম্মদ নবী রয়েছেন। ঠিক তেমনি বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন, তাসকিন আহমেদরা রয়েছেন। স্পিনে সাকিব আল হাসানতো আছেনই। সাথে মেহেদি হাসান, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ রয়েছেন। ব্যাটিংয়ে যদি আফগানিস্তানের হযরতুল্লাহ জাজাই, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, নজিবুল্লাহ জাদরান, করিম জানাত, নবী, রশিদরা থাকেন। তাহলে বাংলাদেশের ব্যাটিং শিবিরে এনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, সাব্বির রহমান রুম্মন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা রয়েছেন। লড়াই কিন্তু কঠিন হবে। তবে বাংলাদেশে যেমন হার্টহিটারের অভাব, আফগানিস্তানের এখানেই শক্তি বেশি।
মিরাজ বলেছেন, বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচে ফল নির্ধারণ করবে ব্যাটিং। যারা ভালো ব্যাটিং করবে ম্যাচটি তাদেরই জেতার বেশি সম্ভাবনা থাকবে। আর সেজন্য আফগানিস্তানের বোলারদের মোকাবিলা করতে টাইগার ব্যাটসম্যানরাও নিজেদের যথার্থ প্রস্তুতি নিয়েছে। মিরাজ জানান, ‘আমরা উইকেট থেকে যে সুবিধা পাবো ওরাও সেই সুবিধা পাবে। কারণ, ওদেরও স্পিন এ্যাটাক ভালো, আমাদেরও স্পিন এ্যাটাক ভালো। দেখতে হবে কারা ওই উইকেটে ভালো ব্যাটিং করছে। যারা ভালো ব্যাটিং করবে তাদের পক্ষে ফল যাওয়ার সুযোগ বেশি থাকবে।’
সাথে যোগ করেন, ‘আমরা খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি দেশে। কারণ, এখানে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আমাদের হতে হবে, এটা নিয়ে সবাই পরিষ্কার। ওপেনার থেকে শুরু করে শেষ ব্যাটসম্যান পর্যন্ত পুরো দলের মধ্যে আমরা সেভাবেই কথা বলেছি। যার যার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। অধিনায়ক প্রতিটা খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমি মনে করি, প্রতিটা খেলোয়াড়ের নিজের ভূমিকা পরিষ্কারভাবে জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
মিরাজ আরও বলেন, ‘আমরা অবশ্যই জিততে চাই, সবাই জিততে চায়। জিততে গেলে যেসব প্রক্রিয়া আছে, ব্যাটারদের রান করতে হবে, বোলারদের উইকেট নিতে হবে। কিভাবে একটা দল জিততে পারে, সবাইকে একসাথে পারফর্ম করতে হবে।’