স্টাফ রিপোর্টার- পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়া ঢাকা নগর পরিবহনের মাধ্যমে আট মাসে ২৪ লক্ষাধিক ব্যক্তিকে যাত্রী সেবা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৪তম সভা শেষে সাংবাদিকদেরকে সাথে আলাপকালে ঢাদসিক মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ তথ্য জানান।
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “২৬ শে ডিসেম্বর ২০২১ আমরা দীর্ঘদিনের জটিলতা নিরসন করে ঢাকা নগর পরিবহনের প্রথম ২১ নম্বর যাত্রাপথ আমরা শুরু করি। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, অগাস্ট মাস পর্যন্ত এই যাত্রাপথে আমরা ২৪ লক্ষাধিক ঊর্ধ্বে ঢাকাবাসীকে আমরা এই যাত্রী সেবা দিতে সক্ষম হয়েছি। এতে ঢাকা নগর পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিআরটিসি এবং বিভিন্ন মালিকবৃন্দ প্রায় ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা আয় করতে পেরেছে। এর মাধ্যমে এটি প্রমাণিত যে, আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি। যদিও এখনো অনেক প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা এবং সমস্যা রয়েছে। আমরা ধাপে ধাপে সেগুলো সমাধান করে এগিয়ে চলছি।
আগামী ১৩ অক্টোবর নতুন ২টি যাত্রাপথে ঢাকা নগর পরিবহন চালু করা হচ্ছে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস, “আমাদের বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় নতুন বাস দিয়ে ২২ এবং ২৬ নম্বর নতুন যাত্রাপথে আগামী ১৩ অক্টোবর চালু হবে। একই সময় ২৩ নম্বর আরও একটি যাত্রাপথ চালু হওয়ার কথা থাকলেও সেই যাত্রাপথে আরও কাজ বাকি থাকায় সেটি প্রস্তুত করার জন্য ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। আমাদের নতুন এই যাত্রাপথ সব নতুন বাস দিয়ে সেবা চালু হবে। এছাড়া আমাদের পুরোনো ২১ নম্বর রুটে নতুন নতুন বাস আমরা সংযুক্ত করবো। এছাড়াও বাসের শৃঙ্খলা ফেরাতে আগামী ২৫ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমাদের চিরুনি অভিযান চলবে।
ঘোষিত ৩ যাত্রাপথে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা এরই মধ্যে তিনটি যাত্রাপথের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রায় সম্পন্ন করেছি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় মাত্র ৩টি যাত্রী ছাউনি নির্মাণ সম্পন্ন হয়নি। দুটি এমআরটি এর কারণে শাহবাগ মোড়ের কাছে। একটি সচিবালয়ের কাছে, যেটি সম্পন্ন হয়ে যাবে। বাকি দুটি এমআরটি কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করছি এটা সামান্য একটু সময় লাগবে।”
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “ঢাকা শহরে গণপরিবহন সেবায় দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যা রয়েছে। এই শহরে নগর পরিবহন চালু করাটা সত্যিই অনেক চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। আমরা দুই মেয়র আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করছি নগর পরিবহনটির সফল বাস্তবায়নের জন্য। পাইলট হিসেবে একটি রুটে চালু করে ইতোমধ্যে আমরা চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করেছি। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন রুটে আমরা কার্যক্রম শুরু করছি। মানসম্মত সেবার কারনে নগর পরিবহন প্রথম রুটে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, “২২, ২৩ ও ২৬ এই তিনটি রুটে দুইশত নতুন বাস দিয়ে চলবে নগর পরিবহন। বাসগুলোর নির্মাণ কাজ চলমান। সম্পূর্ণ নতুন বাস নির্মাণের জন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে একটু সময় লাগছে। আমরা আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর নতুন বাসের গুণগত মান ও বাস নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে যাবো। আধুনিক মানসম্পন্ন ও আরামদায়ক সম্পূর্ণ নতুন বাস দিয়েই নগর পরিবহন চলবে। এই লক্ষ্যে কাজ চলমান। আশা করছি সবার সহযোগিতায় দ্রুতই স্বপ্নের নগর পরিবহনের মাধ্যমে নগরবাসীকে মানসম্মত সেবা প্রদান করতে পারবো।’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, বিআরটিএ এর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধিসহ কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।