স্টাফ রিপোর্টার- বিএনপির আমলে আমার গ্রামের বাড়িতেই বিদ্যুৎ ছিল না। যে ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল, সেখানেও সব সময় থাকতো না। বিদ্যুৎ মাঝে মধ্যে আসতো। তারা যখন বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে, তখন নিজেদের শুধু হাসি পায় না, আমার মনে হয় হনুমানও হাসে তাদের এই কথায়।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা জানান।
তিনি বলেন,লোডশেডিং নিয়ে বিএনপি কথা বলে? যারা বিদ্যুৎ না দিয়ে খাম্বা দিয়েছিল। তাদের সময় সারাদেশে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল, আমরা যখন ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি তখন মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল। আমার বাড়িতেই বিদ্যুৎ ছিল না। আমরা ক্ষমতায় আসার আরও প্রায় এক বছর পর আমার গ্রামের বাড়িতে বিদ্যুৎ এসেছে।
লোডশেডিং অনেক বেড়ে গেছে। এটা নিয়ে বিরোধী পক্ষ থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণও কথা বলছে। এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি আরও বলেন, এটার ব্যাখ্যা বিদ্যুৎ বিভাগ ও প্রতিমন্ত্রী দিয়েছেন। কয়েকদিন আগে সঞ্চালন লাইনে সমস্যা হওয়ার কারণে সারাদেশে ব্ল্যাকআউট হয়েছিল কয়েক ঘণ্টার জন্য।
তিনি বলেন, দ্রুত সেটি আবার ঠিক করা হয়েছে। এ রকম ব্ল্যাকআউট কিন্তু আমেরিকায়ও হয়। নিউইয়র্ক শহরে মাঝে মধ্যে বেশ কয়েকবার সেখানে ব্ল্যাকআউট হয়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। অনেক উন্নত দেশেও এ রকম হয়েছে।
বিএনপির সময় ২৪ ঘণ্টা ব্ল্যাকআউট ছিল। কয়েক দফায় ২৪ ঘণ্টা, ১২ ঘণ্টা এ রকম ব্ল্যাকআউট ছিল। সেদিন যেটা হয়েছে সেটা স্বল্প সময়ের মধ্যে ঠিক করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ যে ব্যাখ্যাটি দিয়েছে, সতর্কতার সঙ্গে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে আবার পুনরায় চালু করা হচ্ছে এবং সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহও করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এজন্য লোডশেডিংটা একমাস আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। এই সংকট কেটে যাবে খুব সহসা, যেটা বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী পরিষ্কার করেছে।
এদিকে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, বিএনপির সংসদ সদস্যরা (এমপি) পদত্যাগ করলে তাদের আসনে উপনির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বিএনপি থেকে নতুন একটা আওয়াজ দেওয়া হচ্ছে, তারা যদি আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা দেয় সেক্ষেত্রে সংসদে তাদের যে দলীয় এমপিরা আছেন, তারা পদত্যাগ করবেন- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, তারা যদি সেটা করে সেখানে উপ-নির্বাচন হবে। অসুবিধাতো নেই। পাঁচজন সংসদ সদস্য তাদের আছে।
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন বিভাগীয় সম্মেলন হচ্ছে। তাদের এই সম্মেলনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের তৈরি হবে। তাতেই সরকারের পতন হবে- এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব তো এরকম কথা আসলে গত সাড়ে ১৩ বছর বলে আসছেন। নানা ধরনের সভা তারা গত সাড়ে ১৩ বছর ধরে করেছেনও। এর আগেও তারা বিভাগীয় সমাবেশ করেছে, জেলা সমাবেশ করেছে। সেই সমস্ত সমাবেশে আবার নিজেরা নিজেরা মারামারি করেছে, নিজেরা নিজেদের সমাবেশ পণ্ড করেছে। এ ধরনের ঘটনাও ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, বিভাগীয় সমাবেশের নামে তারা যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায়, তাহলে সরকার যেমন জনগণের নিরাপত্তা বিধান করার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, জনগণ যদি প্রতিরোধের ব্যবস্থা গড়ে তোলে আমাদের দলও জনগণের সঙ্গে থাকবে।
গতকাল হিউম্যান রাইটসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিএনপির ওপর নির্যাতন, হয়রানি, গ্রেফতার চলছে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হিউম্যান রাইটস ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তারা অনেক সময় অনেক বিবৃতি দেয়। এছাড়া এমন কিছু সংগঠন আছে যারা বিবৃতি বিক্রি করে। তো এখন কে কী বললো, যেমন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আইরিন খান তারেক রহমানের বেয়াইন হন। বেয়াইন যখন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয় বা আরেক দিকে কোন বেয়াইন থাকলে সেখান থেকে বিবৃতি আসে বা বিক্রি হয়। সে বিবৃতির তো কোনো মূল্য নেই।
হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি ও কিছু কিছু ব্যক্তি বিশেষ বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে যে অভিযোগ করে আসছে, তা কাজে আসেনি। বরং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। এটা প্রমাণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঠিক পথে আছেন।