Search
Close this search box.

বিমানের এমডির কক্ষ থেকেই প্রশ্ন ফাঁস হয়, দায়ীদের ছাড় নয়- ডিবি

স্টাফ রিপোর্টার- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করতে নির্ধারিত একটি কমিটি ছিল। প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় কমিটির অবহেলা রয়েছে, তাই এ ঘটনায় তারা দায় এড়াতে পারেন না।

গ্রেফতারকৃতদের জবানবন্দি, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী ঘটনায় আরো কয়েকজনের নাম এসেছে। এই প্রশ্নফাঁসে দায়ী কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবি জানায়, বিমানের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৯ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আসামিদের জবানবন্দি ও তদন্তে জানা গেছে, বিমানের এমডির কক্ষে প্রশ্নপত্র ফটোকপি করার সুযোগে অফিস সহকারী জাহিদ মোবাইলে ছবি তুলে বাইরে পাঠান। এই প্রশ্নফাঁসে এখন পর্যন্ত ৫০ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া, কিছু ব্লাঙ্ক চেকও উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ।

তিনি জানান, প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর ডিবি লালবাগ আওলাদ হোসেন (২১), জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), এনামুল হক (২৮), হারুন-অর-রশিদ (৪০) ও মাহফুজুল আলম (৩১) নামে বিমান বাংলাদেশের পাঁচ কর্মচারীকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মো. মাসুদ (৩৪), জাহিদ হাসান (২৮), সমাজু ওরফে সোবহান (৩০), জাবেদ হোসেন (২৮) এবং জাকির হোসেন (২৯) নামে আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

এদের মধ্যে ৯ জন জবানবন্দিতে প্রশ্নফাঁসের যাবতীয় অপকর্ম বিবরণ দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরীক্ষা সম্পন্নের কমিটির মূল জিএম অ্যাডমিনের কক্ষে প্রশ্নপত্র রেডি হয়। সেখান থেকে একজন প্রশ্নপত্রের ছবি তোলেন।

২০ অক্টোবর বিমানের লোগো মুছে ফেলে ৮০টা প্রশ্ন টিক চিহ্ন দিয়ে আরও দুজনের কাছে সরবরাহ করেন।

আবার ১৯ অক্টোবর সামারাইজ প্রশ্নের ফটোকপি করতে এমডির অফিস সহকারী জাহিদ হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি স্মার্ট ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ফটোকপির সময় ছবি তুলে সোবহানের কাছে পাঠিয়ে দেন। সোবহান আরও কয়েকজনের কাছে সরবরাহ করেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ প্রতিটি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র তৈরি, প্রিন্টিং ও পরীক্ষার আয়োজনের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে। যাবতীয় কার্যক্রম তারা করেন। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু এমডি সাহেবের অফিস সহকারী জাহিদ ছবি তুলে তা ফাঁস করেন। যারা বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন তারা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ইতোপূর্বে বিভিন্ন নিয়োগের সময়ও একইভাবে তারা বিমান বাংলাদেশের নিয়োগ সংক্রান্ত অপকর্ম করেছেন, চুরি করে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। এ অপকর্মে তারা আরও অনেকের নাম বলেছেন। আমরা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবো।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁস করেছেন এমডির অফিস সহকারী জাহিদ। নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে নির্ধারিত কমিটির সদস্যরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার দায় এড়াতে পারেন না।

আমরা গ্রেফতারদের জবানবন্দি বিশ্লেষণ করছি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছি। সবকিছু মিলে যাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের দায় এসেছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে নিয়োগ পরীক্ষার কমিটির সদস্যদের কেউকে কাউকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ