স্টাফ রিপোর্টার- বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট “নৌ পুলিশের” নবম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে।
সোমবার বিকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে জাঁকজমকপূর্ণ র্যালির মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচির সূচনা হয়। র্যালিতে নেতৃত্ব দেন নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ শফিকুল ইসলাম। এ উপলক্ষে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম এমপি, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোঃ মঞ্জুরুল কিবরিয়া, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপিগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং নৌ পরিবহনের সাথে যুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিষ্ঠার নবম বছরেই নৌ পুলিশ একটি শক্তিশালী অবস্থানে এসেছে। নৌ পুলিশ আছে বলেই আমরা অনেক সফলতার গল্প শুনছি। দেশ মৎস্য সম্পদে ভরপুর হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, নদীপথে ডাকাতি, অপহরণ, জেলেদের ধরে নিয়ে আটকে রাখার ঘটনা ঘটতো। নৌ পুলিশের আভিযানিক কার্যক্রমের ফলে এসব অপরাধ কমে এসেছে । আমাদের মৎস্য আহরণ ও মৎসখাতে অর্থনৈতিক অবস্থান সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে নৌ পুলিশকে আরও শক্তিশালী করতে আমরা কাজ করছি।
এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, নৌ পুলিশ অনেক ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এক সময় কাজ করেছে। এখন সে দৃশ্য বদলেছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও মৎস্য আহরণ বৃদ্ধিতে নৌ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে করোনাকালে তিন দেশ মৎস্য আহরণে বড় কোনো বাধার সম্মুখীন হয়নি। তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। নৌপথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গঠন করা হয়েছে বিশেষায়িত ইউনিট নৌ পুলিশ।
তিনি বলেন, শুধু হালদা নয়, নৌ বাণিজ্য ও আভ্যন্তরীণ নৌ পথকে নিরাপদ করেছে নৌ পুলিশ ৷ এখন নদী রক্ষায় সব সময় নৌ পুলিশকে ডাকলে পাওয়া যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, নদী মাতৃক বাংলাদেশের নৌ পথের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নৌ পুলিশ গত নয় বছর অনেক সাফল্য দেখিয়েছে। তিনি নৌ পুলিশকে প্রযুক্তিগত দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর নৌ পুলিশ গঠিত হয়। নৌ পুলিশ আভিযানিক সফলতা দিয়ে নৌপথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ফলে নৌপথ নিরাপদ হয়েছে, মৎস্য উৎপাদন বেড়েছে। নৌ পুলিশ নৌ অঞ্চলের মানুষের সমর্থন ও আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে নৌ পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ইলিশ ও নদীর সব ধরনের মাছ সংরক্ষণে নৌ পুলিশ কাজ করে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ইলিশ উৎপাদন বেশি হবে বলে আমরা আশা করছি। ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদনও বেড়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে মাছের রপ্তানি আগের তুলনায় বেড়েছে। এই সেক্টরে আরও বেশি কাজ করতে পারলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। অনুষ্ঠানের শুরুতে নৌ পুলিশের কার্যক্রমের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রর্দশন করা হয়।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আয়োজনকে স্মরণীয় করে রাখতে অতিথিরা একটি কেক কাটেন।