স্টাফ রিপোর্টার – গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। রবিবার বিইআরসি কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি এ সুপারিশ করে। তবে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়লে ২০২৩ সালের মূল্যস্ফীতিকে তা উসকে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা শামসুল আলম। রবিবার রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনের শহীদ এ কে এম শামসুল হক খান অডিটরিয়ামে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয়ে গণশুনানি চলাকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
শাসসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি, সিস্টেম লস, অনিয়ম বন্ধে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সরকার। অন্যদিকে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে জনগণের কষ্ট বাড়ছে। শুনানিতে বিইআরসির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, সদস্য আবু ফারুক, সদস্য মকবুল ই ইলাহীসহ অন্যান্য সদস্য, সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের আগস্টে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর বেড়েছে বেশির ভাগ পণ্য ও সেবার খরচ। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বল্প আয়ের মানুষেরা। এর মধ্যে খরচের খাতায় যুক্ত হচ্ছে নতুন আরেক খাত। এবার গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৫ শতাংশের বেমি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি।
সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে বিইআরসি। এরপর বিদ্যুতের খুচরা দাম বৃদ্ধির আবেদন করে পাঁচ প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, আমরা একটি খারাপ সময় অতিক্রম করছি। করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্ব সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম না। কিছুটা রক্ষণাত্মক ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে। এ জন্য কমিশনকে দূরদর্শিতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কমিশন এ বিষয়ে সব সময় আন্তরিকতা সঙ্গে সচেষ্ট থেকেছে। তবে আমাদের ব্যর্থতা নেই এটা দাবি করবো না।
তিনি বলেন, কমিশন অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তি করে থাকে। কারো কোন অভিযোগ থাকলে ৫৪ ধারায় আবেদন করতে পারেন।
গতবছর ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯.৯২ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি ইউনিট ৫.১৭ টাকা বাড়িয়ে ৬.২০ টাকা নির্ধারণ করে বিইআরসি। বিপিডিবি ইউনিট প্রতি বর্তমান দর ৫.১৭ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৫৮ টাকা করার আবেদন করেছিল। সেই প্রস্তাবের উপর গণশুনানি নেওয়া হয় গত মে মাসের ১৮ তারিখে। আর ১৩ অক্টোবর বিপিডিবি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে দেন বিইআরসি। রিভিউ আবেদন জমা দিলে দাম বাড়িয়ে দেয় বিইআরসি।
পাইকারি দাম বৃদ্ধির পর বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির আবেদন নিয়ে এসেছে। তার উপর গণশুনানি হয়। বিইআরসি টেকনিক্যাল কমিটি গ্রাহক পর্যায়ে ১৫.৪৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সুপারিশ দেয়। অন্যদিকে পিজিসিবি সঞ্চালন চার্জ ১৯০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিপরীতে টেকনিক্যাল কমিটি ১৩.৯৯ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে।