স্টাফ রিপোর্টার- রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ ও চার দফা নির্দেশনাসহ হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তার ওপর জারি করা স্থিতাবস্থা বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজউকের করা এ সংক্রান্ত লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ফলে আপাতত হাতিরঝিলের স্থাপনা উচ্ছেদ হচ্ছে না। একই সঙ্গে রাজউকের করা আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) শুনবেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
মনজিল মোরসেদ বলেন, হাতিরঝিল প্রকল্প নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাজউকের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আর হাতিরঝিলের রেস্তোরাঁ, স্থাপনা আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উচ্ছেদ করা যাবে না মর্মে যে স্ট্যাটাসকো দিয়েছিলেন, সেটি কন্টিনিউ থাকবে।
আদালতে রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমাম হাসান। রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। আর ব্যবসায়ীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম।
এর আগে গত ৭ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ আদেশ দিয়েছিলেন।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন, বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহীম। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানির জন্য উঠে।
এর আগে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের লেআউট প্ল্যানের বাইরে স্থাপনা ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার বৈধতা নিয়ে ২০১৮ সালে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট হয়। রিটটির চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৩০ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদসহ চার দফা নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। এছাড়া নয় দফা সুপারিশ করেন।
এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের পাশাপাশি স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করে রাজউক, যা গত ১৯ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।
রাজউকের আইনজীবী ইমাম হাসান বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদনটি করা হয়। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। ফলে আগে যেভাবে হাতিরঝিলে কার্যক্রম চলছিল, সেভাবেই কার্যক্রম চলবে। অর্থাৎ আপাতত বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করতে হচ্ছে না।