বাসস – লিটন দাসের ঝড়ো ইনিংসের সুবাদে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নবম আসরে সিলেট স্ট্রাইকার্সের জয়রথ থামালো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
আসরের ১৬তম ম্যাচে কুমিল্লা ৫ উইকেটে হারিয়েছে সিলেটকে। ৪২ বলে ৭০ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন লিটন।
প্রথম পাঁচ ম্যাচ জয়ের পর নিজেদের ষষ্ঠ খেলায় প্রথম হারের মুখ দেখলো মাশরাফির সিলেট। অন্য দিকে পঞ্চম ম্যাচে দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো কুমিল্লা।
স্থানীয় জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে সিলেটকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানান কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ হারিস। তবে জাতীয় দলে সতীর্থ পেসার হাসান আলির পরের ডেলিভারিতেই আউট হন ৬ বলে ৭ রান করা হারিস।
পরের দুই ওভারে আরও দুই ব্যাটারকে হারায় সিলেট। পেসার আবু হায়দারের করা তৃতীয় ওভারে প্রথম বলে বিদায় নেন তিন নম্বওে নেমে ১ রান করা আকবর আলি। পরের ওভারের চতুর্থ বলে ৯ রান করা জাকির হাসানকে ফেরান হাসান। এতে পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৫ রানে পরিনত হয় সিলেট।
চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টা করেও, বেশি দূর যেতে পারেননি ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। নবম ওভারে দ্বিতীয়বারের মত আক্রমনে এসে প্রথম দুই বলেই শান্ত-মুশফিককে তুলে নেন পেসার মুকিদুল ইসলাম। শান্ত ১৯ বলে ১৩ ও মুশফিক ৩টি চারে ১৫ বলে ১৬ রান করেন। ২৮ বলে ২৮ রান যোগ করেন শান্ত-মুশফিক জুটি। একই ওভারের শেষ বলে রান আউট হন শরিফুল্লাহ।
পরের ওভারে স্পিনার তানভীর ইসলামের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। এতে ৫৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে দ্রুত গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে সিলেট। কিন্তু লোয়ার-অর্ডারে সেটি হতে দেননি ইমাদ ওয়াসিম-থিসারা পেরেরার জুটি।
অষ্টম উইকেটে ৬৩ বলে ৮০ রান তুলে সিলেটকে ৭ উইকেটে ১৩৩ রানের সংগ্রহ এনে দেন ইমাদ ও পেরেরা। ইমাদ ৩২ বলে অপরাজিত ৩৯ ও পেরেরা ৩২ বলে অনবদ্য ৪৪ রান করেন। ইমাদ ৩টি চার ও ১টি ছয় এবং পেরেরা ২টি করে চার-ছয় মারেন। কুমিল্লার হাসান-মুকিদুল ২টি করে উইকেট নেন।
১৩৪ রানের লক্ষে খেলতে নেমে কুমিল্লাকে দারুন শুরু এনে দেন ওপেনার লিটন দাস। লিটনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার-প্লেতে ৪৯ রান পায় কুমিল্লা। এসময় ২৪ বলে লিটনের অবদান ছিল ৩৪ রান । অন্যপ্রান্তে ১২ বলে ১১ রান করেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান।
অষ্টম ওভারে দলীয় ৫৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় কুমিল্লা। রান আউটের ফাঁেদ পড়ে ১৫ রানে করে আউট হন রিজওয়ান।
উইকেটে এসে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ১টি করে চার-ছয় মারেন তিনি। ১২তম ওভারে অফ-স্পিনার শরিফুল্লাহর বলে আউট হওয়ার আগে । ১৯ বলে ১৮ রান করেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল।
১৪তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কায় এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান লিটন। এজন্য ৩৭ বল খেলেছেন তিনি। ওভারে লিটনের আরও ২টি ছয় ও ১টি চারে ২৪ রান পায় কুমিল্লা।
পরের ওভারে লিটনকে থামান মাশরাফি। ৪২ বলে ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭০ রানের ইনিংসটি সাজান লিটন। ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আবারও উইকেট শিকার করেন ম্যাশ। এবার মাশরাফির শিকার ৩ রান করা পাকিস্তানের খুশদিল শাহ। আর তৃতীয় বলে রান আউট হন জাকের আলি।
এমন অবস্থায় শেষ ৩ ওভারে ১৬ রান দরকার পড়ে কুমিল্লার। ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ১৭ রান তুলে দলের জয় নিশ্চিত করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জনসন চার্লস ও মোসাদ্দেক। ১৯ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩৪ রান করে কুমিল্লা। চার্লস ১৮ ও মোসাদ্দেক ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। সিলেটের মাশরাফি ৪ ওভারে ১৯ রানে ২ উইকেট নেন।