স্টাফ রিপোর্টার- তুরস্কে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পে বাংলাদেশের সম্মিলিত সাহায্যকারী দলের সাথে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উদ্ধারকর্মীরা অত্যন্ত দক্ষতা ও আন্তরিকতার সাথে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন।
তিনি এই বিরল সুযোগ করে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক কতৃজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বুধবার ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরে আয়োজি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মহাপরিচালক জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে তুরস্ক সরকার কর্তৃক আন্তর্জাতিক সাহায্য চাওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে তুরস্কে একটি সম্মিলিত সাহায্যকারী দল পাঠানোর নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ নির্দেশনার আলোকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ১২ সদস্যের এই উদ্ধারকারী দল তুরস্কে প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে উদ্ধারকারী দলের সদস্য হিসেবে যারা তুরস্কে গিয়েছিলেন তারা ইন্টারন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অ্যাডভাইজারি গ্রুপ এর স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বিধ্বস্ত ভবনে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনা বিষয়ে আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের সম্মিলিত উদ্ধারকর্মীদের সাথে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা জোটবদ্ধভাবে প্রথমে তুরস্কের আদিয়ামান শহরে এবং পরে হাতাই প্রদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনা করেন। এ সময় তারা ১ জন তরুণীকে জীবিত এবং ২৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। বাংলাদেশের সম্মিলিত উদ্ধারকারী দলের কার্যক্রমে তুরস্কের সরকার খুবই সন্তুষ্ট। তাদের অনুরোধে বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের উদ্ধারকাজের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের দেশে ফেরার কথা থাকলেও সময় বৃদ্ধি করায় তারা মঙ্গবার দেশে ফিরেছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন জানান, উদ্ধারকারী দল প্রেরণ ছাড়াও আমরা তুরস্কের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য উষ্ণ বস্ত্র পাঠিয়েছি। বাংলাদেশের তুরস্ক দূতাবাসের ডেপুটি চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিস আয়েশা এসব উষ্ণ বস্ত্র রিসিভ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বাংলাদেশের উদ্ধারকারীদের উদ্ধার কার্যক্রমের ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। ভিডিও চিত্রে বাংলাদেশের উদ্ধার কার্যক্রম সম্পর্কে বিভিন্ন জনের মতামত তুলে ধরা হয়। সেসব মন্তব্যে বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দল সম্পর্কে তুরস্কের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা উঠে আসে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যা বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক।
এছাড়া উদ্ধারকর্মীদের দলনেতাসহ ২ জন গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।