স্টাফ রিপোর্টার- দুই মাস বৃদ্ধির পর আবারও ফেব্রুয়ারি মাসে হোঁচট খেলো প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স)। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসের (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) হিসাবে এখনো ইতিবাচক ধারায়। এ সময়ে প্রবাসী আয় এলো ১৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা এক হাজার ৪০১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে)। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। বুধবার হাল নাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ১৪৬ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার বা ১ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে। টাকার অংকে (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে) যা ১৬ কোটি ৭০৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের মাস জানুয়ারিতে এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার। সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এক হাজার ৪০১ কোটি ৩৪ লাখ বা ১৪ দশমিত শুন্য ১ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সুখবর দিয়ে শুরু করেছিল প্রবাসী আয়ে। প্রথম মাস জুলাইয়ে ২১০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। দ্বিতীয় মাস আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।
পরের মাস সেপ্টেম্বরে হোঁচট খায়; নেমে আসে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলারে। অক্টোবরে তা আরও কমে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলারে নেমে আসে। পরের তিন মাস টানা বেড়েছে; নভেম্বরে আসে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে আসে ১৭০ কোটি ডলার। ২০২৩ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে আসে আরও বেশি, ১৯৬ কোটি ডলার। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে তা বেশ কমে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। দুই মাস ইতিবাচক ধারার সূচনা অব্যাহত থাকার পর ফেব্রুয়ারি মাসে হোচক খাওয়ার পেছনে কম দিনের মাসের প্রভাব ফেলেছে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার রেমিট্যান্সপ্রবাহের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে আসা ১৫৬ কোটি ডলার প্রবাসী আয়ের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৭ কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১২৪ কোটি ৫ লাখ ডলার। আর ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এক হাজার ৪০১ কোটি ৩৪ লাখ (১৪.০১ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
প্রবাসী আয় বৈদেশিক রিজার্ভের বড় মাধ্যম। যা তুলনামূলক কম ব্যয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসে রেমিট্যান্সে নিম্নমুখী হওয়ার পর বেশ কিছু ব্যবস্থা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে হুন্ডি ও অবৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা; রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা; রেমিট্যান্স পাঠাতে ফি প্রত্যাহার এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানোর মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরের মাস থেকেই সুফল পাওয়া শুরু হয়। বাড়তে থাকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসা।