বাসস – ঢাকায় নবনিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন ও বাংলাদেশ ‘স্বাভাবিক সহযোগিতার’ অংশীদার যেখানে ঢাকা ও বেইজিংয়ের সম্পর্কের সম্ভাবনা ‘সীমাহীন’।
চীনা দূতাবাসে নতুন দূতের সম্মানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের সম্ভাবনা সীমাহীন।’
তিনি আরো বলেছেন, চীন ও বাংলাদেশ স্বাভাবিক সম্পর্কের অংশীদার কারণ, উভয়েই উন্নয়নশীল ও বিপুল জনসংখ্যার দেশ।
নতুন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে অমীমাংসিত বিরোধ কিংবা ঐতিহসিক কোন বোঝা নেই।’
ওয়েন বলেছেন, এছাড়া চীন ও বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিষয়ে নিবিড়ভাবে সহযোগিতা ও সমন্বয় করবে যেন অনিশ্চিত ও অস্থির বিশে^ আরো স্থিতিশীলতা ও নিশ্চয়তা তৈরি করা যায়।
তিনি বলেছেন, অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বৃহৎ প্রকল্পসমূহের সহযোগিতা ঢাকা ও বেইজিংয়ের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে।
ওয়েন আরো বলেছেন, ‘চীন ও বাংলাদেশের মধ্যকার সহযোগিতা দু’দেশের জনগণের কল্যাণকেও আরো উন্নত করবে।’
তিনি বলেছেন, একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সড়ক, সেতু, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বন্দরও অন্যান্য অবকাঠামো প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে যা বাংলাদেশের ভৌগলিক চিত্রকে নতুন আকার দিয়েছে। এছাড়া ১০ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও বাংলাদেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে।
তিনি আরো বলেছেন, চীন সার্বিক অর্থেই আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশের দিকে নতুন যাত্রা করেছে যেখানে বাংলাদেশ অপরূপ স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গঠনে ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত আশা করে বলেছেন, চীন বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নশীল দেশগুলোর একে অপরকে বুঝতে, বিশ^াস ও সমর্থন যোগাতে একটি ভালো উদাহরণ তৈরি করবে।
তিনি বলেছেন, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে দ’ুদেশের জনগণের মধ্যে অন্তরঙ্গতা, অনুরূপ ধারনা ও মূল্যবাধের স্বাভাবিক অনুভূতি রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫০এর দশকে দু’বার চীন সফর করেছিলেন।
তিনি বলেছেন, ওই ভ্রমণকালে তিনি যা দেখেছিলেন তাতে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং ‘আমার দেখা নয়া চীন’ নামে একটি ভ্রমণকাহিনী লিখেছিলেন যা তাঁর চীন সম্পর্কিত সদয় ও উষ্ণ অনুভূতি বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে ও মনে স্থান করে নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং পররাষ্ট্র সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দল, উদ্যোক্তা, বিশ^বিদ্যালয়, থিংক ট্যাংক, সংবাদ মাধ্যম, ঢাকায় বিদেশী মিশনসমূহ এবং স্থানীয় চীনা কমিউনিটির চারশ’রও বেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি এ অন্ষ্ঠুানে উপস্থিত ছিলেন।
নতুন দূতকে স্বাগত জানানো শেষে চীনা দূতাবাসের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারা আশা করছে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিভাবকত্বে চীন ও বাংলাদেশ সুস্থ ও স্থিতিশীল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি অব্যাহত রাখবে এবং চীন ও বাংলাদেশের বাস্তব সহযোগিতা এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করবে এবং যৌথভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উদাহরণ তৈরি করবে।