Search
Close this search box.

বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হতে হলে আমাদেরকে সৎ হতে হবে- মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি

স্টাফ রিপোর্টার ‘বঙ্গবন্ধু একজন সৎ মানুষ তাই বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হতে হলে আমাদেরকে সৎ হতে হবে। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বিশ্ব মানচিত্রে একটি দেশের জন্ম দেওয়া এই মানুষটিকে মাত্র ৫৫ বছর বয়সে সপরিবারে হত্যা করে কিছু বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা। তবে বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।’

শুক্রবার (১৭ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ফরিদগঞ্জ উপজেলা মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, দৈনিক পথে প্রান্তরের প্রধান সম্পাদক ও সিইও মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি এ কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য ঐতিহাসিক কমর্ময় জীবন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ শেখ লুৎফর রহমান এবং সায়েরা খাতুন দম্পতির তৃতীয় সন্তান ‘খোকা’ পরবর্তী সময়ে হয়ে ওঠেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ ও জনগণের প্রতি অসাধারণ মমত্ববোধের কারণে হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু। কিশোর বয়স থেকেই রাজনীতি সচেতন ছিলেন বঙ্গবন্ধু। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো কারাবরণ করেন। ম্যাট্রিক পাসের পর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়নকালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের মতো রাজনৈতিক নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন। এমন বর্ষীয়ান নেতার সাহচার্যে তিনি নিজেকে ছাত্র-যুবনেতা হিসেবে রাজনীতির অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আযাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পরপরই ঢাকায় ফিরে নতুন রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা নিয়ে অগ্রসর হন বঙ্গবন্ধু। সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ গঠন হলে যুগ্ম সম্পাদক পদ পান বঙ্গবন্ধু। পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনে স্বাধীনতার অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে মুক্তির মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে গেছেন স্বাধীনতা ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্যে। ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার এই অবিসংবাদিত নেতাকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়। তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তী সময়ে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ করেন। তাঁর সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে-ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হলেও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালি জাতির ওপর নানা নির্যাতন শুরু করে। এরপর বঙ্গবন্ধু স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে প্রথমে স্বাধিকার আন্দোলন এবং চূড়ান্ত পর্বে স্বাধীনতার আন্দোলনে রূপ দেন। এ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মার্চে নজিরবিহীন অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু বেশি দিন দেশ গঠনের কাজ করে যেতে পারেননি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু যখন নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করতে শুরু করেন, ঠিক সেই মুহূর্তে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি ও কায়েমি স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র শুরু করে। ওই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ধানমন্ডির বাসভবনে কতিপয় বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার হাতে সপরিবারে নিহত হন।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমুন নেছার সভাপ্রধানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে  শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন ও র‌্যালী করেন চাঁদপুর- ৪ ফরিদগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তা- কর্মচারীবৃন্দ।

এরপর আলাচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। কৃতকার্য প্রতিযোগীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ