Search
Close this search box.

ফাঁদে পড়ে খুন হন স্থপতি ইমতিয়াজ, গ্রেফতার ৩

স্টাফ রিপোর্টার- রাজধানীর তেজগাঁওয়ের স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া (৪৭) হত্যার ঘটনায় অ্যাপভিত্তিক একটি চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকারও উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার ঢাকা, সিরাজগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন মো. মিল্লাত হোসেন মুন্না (১৯), মো. আনোয়ার হোসেন (৩৮), এহসান ওরফে মেঘ (২৩)। তাদের দেয়া তথ্যে হত্যার পর মরদেহ বহনে ব্যবহৃত সাদা প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ-১১-১৯৪৪) উদ্ধার করা হয়।

ডিবি জানায়, ইমতিয়াজকে ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের অর্থ দাবি করেছিল চক্রটি। কিন্তু তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় ইমতিয়াজকে হত্যা করা হয়। পরে আসামিদের কয়েকজন অবৈধভাবে ভারতেও পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে অভিযানের মুখে তারা দেশে ফিরে আসে। আসামিদের মধ্যে পাঁচজন শনাক্ত হয়েছে, তিনজনকে ধরার পর বাকিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

গত ৭ মার্চ দুপুরে রাজধানীর কলাবাগান থানার ক্রিসেট রোড এলাকা থেকে ইন্টেরিয়র ডিজাইনার (স্থপতি) ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া নিখোঁজ হন। পরদিন কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়।

স্থপতি ইমতিয়াজ নিখোঁজের ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে ডিবি। এর মধ্যেই জানা যায়, আগের দিন ৮ মার্চ সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার চিত্রকোট ইউনিয়নের কামারকান্দা গ্রামের নবাবগঞ্জ হাইওয়ে রোডের পাশের ঝোঁপ থেকে ইমতিয়াজ ভূইয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহটি উদ্ধারের পর সিরাজদিখান থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।

তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডিবি জানতে পারে হত্যাকাণ্ডে আরাফাত ওরফে ফয়সাল আহমেদ রাহাত ওরফে হৃদয়, মিল্লাত হোসেন মুন্না, আলিফ, এহসান ওরফে মেঘ এবং আনোয়ার হোসেন নামে পাঁচজন জড়িত। এরপর তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতার অভিযান শুরু করে ডিবি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে রবিবার সিরাজগঞ্জ সদর থেকে মিল্লাত হোসেন মুন্নাকে, পরে ঢাকার কলাবাগান এলাকা থেকে আনোয়ার হোসেনকে এবং এরপর নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকা থেকে এহসান ওরফে মেঘকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছে, তারা একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন লোকজনকে টার্গেট করে বাসায় ডেকে নিয়ে নানান কায়দায় ব্ল্যাকমেইল করে টাকা-পয়সাসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে আসছিল। ইমতিয়াজ ভূইয়ার সঙ্গে আসামি আলিফেরও ওই অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ তৈরি হয়। সেই সূত্রে ৭ মার্চ দুপুরে ইমতিয়াজকে আসামি আরাফাতের বাসায় যেতে বলেন আলিফ। ইমতিয়াজ ওই বাসায় গেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী আলিফের সহযোগী আরাফাত, মেঘ, মুন্না ও আনোয়ার রুমে প্রবেশ করে তাকে ফাঁদে ফেলে মারধর শুরু করে এবং বড় অংকের অর্থ দাবি করে। ইমতিয়াজ টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা তার বুকে-পিঠে আঘাতসহ প্রচণ্ড মারধর করে। এতে ইমতিয়াজের মৃত্যু হয়। পরে তার মরদেহ ওই বাসা থেকে বের করে মেঘের প্রাইভেটকারে উঠিয়ে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের কামারকান্দা গ্রামের নবাবগঞ্জ হাইওয়ে রোডের পাশে ঝোঁপে ফেলে দেয় আসামিরা।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ডিবি জানায়, সেদিন আলিফকে ঢাকার বাসাবো, আনোয়ারকে গ্রিন রোড নামিয়ে দিলেও আসামি আরাফাত, মেঘ, মুন্না প্রথমে নারায়ণগঞ্জ এবং পরে চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ ও কুমিল্লা হয়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যায়। কিন্তু ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধরতে অভিযান চালালে আসামিরা পালিয়ে পুনরায় বাংলাদেশে ফিরে আসে।

ডিবির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিনজন গ্রেফতার হওয়ার পর আলিফ ও আরাফাতকে ধরতেও অভিযান চলছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ