স্টাফ রিপোর্টার- খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধকে বানচাল করার মাধ্যমে পাকিস্তানের স্বার্থরক্ষায় কাজ করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে তারা পাকিস্তানের সঙ্গে আপস করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত ‘খুনি মোশতাক ও জিয়ার অবৈধ সরকারের কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স : পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন এক কালো আইন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ঢাবি আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) মফিজুল হক সরকার, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বক্তব্য দেন।
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ’’বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড জিয়া-মোশতাক চক্রের অবৈধ ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বা দায়মুক্তি অধ্যাদেশ কী এবং কখন জারি হয়েছিল, তা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ক্ষমতায় বসে সামরিক আইন জারি করেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ, যার পেছনে ছিলেন সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী কর্মকর্তা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খন্দকার মোশতাকের হত্যার দায় থেকে মুক্তি বা অব্যাহতি প্রয়োজন হয়। নইলে এদের বাঁচার কোনো উপায় ছিল না। সেজন্য জারি করা হয় পৃথিবীর ইতিহাসের এক নজিরবিহীন কালো আইন—ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বা দায়মুক্তি অধ্যাদেশ।
তিনি আরও বলেন, দায়মুক্তি অধ্যাদেশে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে মামলা বা অভিযোগ দায়ের কিংবা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের সঙ্গে তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা নানা তথ্য-উপাত্তের মধ্য দিয়ে এটি আজ প্রমাণিত যে, এই অধ্যাদেশ জারির পেছনে জিয়া সরাসরি জড়িত ছিলেন। সামরিক অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল নিজেই রাষ্ট্রপতির পদে বসেন জিয়া এবং ওই অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল কুশীলব জিয়া-মোশতাক চক্রের মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচন করার জন্য অবশ্যই কমিশন গঠন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিলেন খন্দকার মোশতাক এবং এটিকে পাকাপোক্ত রূপ দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। ইনডেমনিটির উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করে দেওয়া। সমগ্র বাংলাদেশে এই কালো আইনের ওপর ৫ লাখ লিফলেট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।