স্টাফ রিপোর্টার – সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছেন, বিএনপির গণঅভ্যুত্থান আর দাঁড়াতে পারবে না। নির্বাচনের আগে বা পরে হোক তাদের ভরাডুবি অনিবার্য। লন্ডনের ফরমায়েশ এদেশে চলবে না। পথ হারিয়ে বিএনপির পদযাত্রা মানববন্ধনে পরিণত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আবার গণঅভ্যুত্থানের হুংকার দিচ্ছে। অথচ তাদের গতকালের সমাবেশে ৫শ’ থেকে ৭শ’ লোকের উপস্থিতি হয়েছে। রোযার দিনে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে বিএনপি। জনগণ যে আন্দোলনে থাকে না সেখানে গণঅভ্যুত্থান হয় না। তাদের নেতাকর্মীরা হতাশায় ভুগছে। পথ হারিয়ে বিএনপির পদযাত্রা মানববন্ধনে পরিণত হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার উদারতার কারণে বেগম জিয়া আজ নিজের বাড়িতে আছেন। তার সাজা স্থগিত করে তাকে বাড়িতে রেখেছেন। বিএনপি নেতারা আন্দোলন করে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে পারে নাই।
তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান অনলাইনে মিটিং করে যাচ্ছে। এটাও বাংলাদেশে হচ্ছে, এরপরও তারা বলছে বাংলাদেশে স্বাধীনতা নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বনেতারা যখন শেখ হাসিনার সরকারের প্রশংসা করছে তখন বাংলাদেশের এক শ্রেণীর মিডিয়া সরকারকে প্রতিনিয়ত আক্রমণ করছে। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
তিনি বলেন, শিশুর হাতে ১০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে স্বাধীনতার মর্যাদা ক্ষুন্ন করা কি ঠিক হয়েছে? বিশ্বের অন্য কোথাও এমনটি ঘটলে সেই গণমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিল হতো। শেখ হাসিনা ঠান্ডা মাথায় কাজ করেন। কিন্তু এ অপরাধের জন্য কি তারা কোনো ক্ষমা চেয়েছে? যে জঘন্য অপরাধ তারা করেছে তার শাস্তি তাদের পাওয়া উচিত।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভুলকে ক্ষমা করা যায়, কিন্তু অপরাধকে নয়। অপসাংবাদিকতার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশে লাইসেন্স বাতিল করা হয়, কিন্তু শেখ হাসিনা তা করেননি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এদেশের অসংখ্য সাংবাদিক হত্যা করেছে বিএনপি। সাংবাদিকদের স্বাধীনতার জন্য আওয়ামী লীগই লড়াই করেছে। যারা নিজেরাই সাংবাদিক হত্যা করেছেন, তারা নিজেরাই সাংবাদিকের স্বাধীনতার জন্য মায়াকান্না করে। সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ডসহ সব সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনা সরকার। সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই কিছু কিছু পত্রিকা দেখা যায়, সরকারবিরোধী ও সরকারের সমালোচনার সংবাদ। তবুও বলে স্বাধীনতা নেই। ব্লুমবার্গের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও শেখ হাসিনার প্রশংসা করে, অথচ বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম শেখ হাসিনার সমালোচনা করে। মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরা শেখ হাসিনার প্রসংশা করে, কিন্তু বাংলাদেশের কিছু মানুষ প্রশংসা করতে জানে না। তারা জানে সমালোচনা করতে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার ইতিহাস একদিকে বীরত্বের, অন্যদিকে বিশ্বাসঘাতকতার। জিয়াউর রহমানের বিশ্বাসঘাতকতার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের কলঙ্ক রচনা হয়। ১৫ আগষ্টের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের উৎসাহদাতা ও মাস্টারমাইন্ড জিয়া। খুনীদের পুরস্কৃত করেছে জিয়া। ইনডেমনিটি আইনের স্বীকৃতি কেন দেওয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাব বিএনপি দিতে পারেনি, পারবেও না। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, জয় বাংলাকে নির্বাসনে পাঠানোসহ ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার বন্ধ করেছে জিয়া।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড জিয়ারই বংশধর। বিএনপি যাকে হত্যা করতে চেয়েছে, তাদের শোকে দেখতে গিয়েছেন শেখ হাসিনা। আজও দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে মানবিকতা দেখিয়ে বাসায় থাকতে দিয়েছেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আমরাই লড়াই করেছি। শামসুর রাহমান, মানিক শাহ, হুমায়ুন কবির বালুসহ অসংখ্য সাংবাদিককে যারা হত্যা করেছেন তারা আজকে (ফখরুল সাহেবরা) সাংবাদিকের স্বাধীনতার জন্য মায়াকান্না করেন। এ দেশে অসংখ্য সাংবাদিকের হত্যার হোতা হচ্ছেন তারা।