স্টাফ রিপোর্টার – প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, দৈনিক প্রথম আলো আওয়ামী লীগের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু, দেশের মানুষের শত্রু। পত্রিকাটি নাম রেখেছে প্রথম আলো অথচ তারা দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায়। সংসদে সুবর্ণ জয়ন্তীর বিশেষ অধিবেশনে সমাপ্তি ভাষনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একটি ১০ বছরের শিশুকে ১০ টাকা দিয়ে বলানো হয় – এই স্বাধীনতা নয়, ভাত-কাপড়
মাছ-মাংসের স্বাধীনতা চাই। কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন যারা ‘বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন’ তারা, ‘সামান্য কিছু পয়সার লোভে’ অগণতান্ত্রিক সরকার আনতে প্রথম আলোর তাবেদারি ও পদলেহন করে।
সংসদ নেতা বলেন, প্রথম আলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। এখন দেখা যায়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাজাপ্রাপ্ত তাদের পক্ষ হয়ে তারা ওকালতি করে যাচ্ছে।
সংসদ নেতার বক্তব্যের সমর্থনে সংসদ সদস্যগণ টেবিল চাপড়ে ‘শেইম, শেইম’ উচ্চারণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় এরা এদেশে কখনও স্থিতিশীলতা থাকতে দিতে চায় না। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রথম আলোর অবস্থান ছিল ২০০৭ সালে যখন ইমার্জেন্সি জরুরি অবস্থা হয়, তখন তারা উৎফুল্ল। দুটি পত্রিকা আদাজল খেয়ে নেমে গেল। তাদের সঙ্গে সুদখোর ড. মুহম্মদ ইউনূসও নেমে পড়লেন। বড়ই প্রিয় আমেরিকার।
ড. ইউনূসের অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক, একটা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। এমডি কত বেতন পেতেন। তিনি মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার কোথা থেকে পেলেন যে আমেরিকার মত জায়গায় সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগ করলেন? দেশে বিদেশে এ অর্থ কোথা থেকে আসে, এটা জিজ্ঞেস করেছে কখনও ঐ পত্রিকা? এদের কাছ থেকে দুর্নীতির কথা শুনতে হয়! দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ, এদের কাছ থেকে মানবতার কথা শুনতে হয়! গরিবের রক্ত চোষা টাকা পাচার করে বিদেশে বিনিয়োগ করে শত কোটি টাকার মালিক হয়ে আবার আন্তর্জাতিক পুরষ্কারও পেয়ে যায় এবং এসব লোক এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র চর্চা করে আটলান্টিকের পাড় পর্যন্ত। এটা পার হয়ে গেলে আপনাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটা কি পাল্টে যায়? কেন আপনারা একটা মিলিটারি ডিকটেটরকে সমর্থন দিচ্ছেন? আমি এ প্রশ্নটা (প্রথম আমেরিকা সফরের কথা তুলে ধরে) করেছিলাম, আজকেও বলি।
শেখ হাসিনা বলেন, যে দেশটা আমাদের কথা কথায় গনতন্ত্রের ছবক দেয়, আমাদের বিরোধী দল থেকে শুরু করে কিছু কিছু লোক তাদের কথায় খুব নাচা নাচি করে। ওঠবস করছেন, উৎফুল্ল হচ্ছেন। হ্যাঁ, তারা যে কোনো দেশে ক্ষমতা উল্টাতে পারে, পাল্টাতে পারে। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে আরও বেশি কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের আমাদের যে এত জ্ঞান দিচ্ছে, কথায় কথায় ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস এর কথা বলে, তাদের দেশের অবস্থাটা কী?