স্টাফ রিপোর্টার – বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশবাসীকে নির্বাচন বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন। সবাইকে নিয়ে আন্দোলন জোরদার করার কথা বলেছেন তিনি। বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আন্দোলনের বিকল্প নেই। বিএনপি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না মর্মে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। কথাগুলো বলেছেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সোমবার সাক্ষাৎ করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। রাত সোয়া ৮টায় খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় যান তিনি। সাক্ষাৎ শেষে রাত ১০টার দিকে তিনি বের হয়ে আসেন।
মান্না বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আগের মতোই অসুস্থ। হাঁটতে, চলতে কষ্ট হচ্ছে। তিনি উন্নত চিকিৎসা করাতে চাচ্ছেন। তার চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়া দরকার ছিল। কিন্তু তা তো দেওয়া হচ্ছে না। যার কারণে পুরোপুরিভাবে তিনি সুস্থও হতে পারছেন না।
মান্না আরও বলেন, সরকার বলছে, আপনার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই। আমরা আন্দোলনের সহায়ক হিসেবে আপনাকে চাচ্ছি, এমন প্রশ্নের জবাবে মৃদু হেসে বেগম জিয়া বলেন, আপনারা যারা আন্দোলনে আছেন সবাই অভিজ্ঞ। অনেক আন্দোলনে আপনারা নেতৃত্ব দিয়েছেন। কেউ কেউ বলছে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়া উচিত মান্নার এমন প্রশ্নের জবাবে বেগম জিয়া বলেন, প্রশ্নই আসে না। এ বিষয়ে আমি কোনো এলাও করবো না।
ঈদের পরও বিএনপির এখনো কোনো কর্মসূচি নেই, কঠোর আন্দোলন নেই – এমন কথার জবাবে বিএনপি চেয়ারপারসন একমত পোষণ করে বলেন, এটা ঠিক হাতে সময় নেই। চূড়ান্ত আন্দোলনের বিষয়ে সিরিয়াস হতে হবে। সরকারকে আর সময় দেয়া যাবে না। জানান মাহমুদুর রহমান মান্না।
বেগম জিয়া রাজনীতি নিয়ে চিন্তিত উল্লেখ করেন মান্না বলেন, ম্যাডাম তো সক্রিয় রাজনীতিতে নেই, কিন্তু তিনি দেশের রাজনীতি নিয়ে চিন্তিত। দেশ অন্ধকারের দিকে চলে গেছে। নৈতিক অবস্থা ধ্বংসের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে সবাই মিলে চেষ্টা করতে বলেছেন।
মান্না বলেন, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া কষ্টে আছেন। তিনি নিজে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে কিছু করতে পারছেন না বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আমাকে বলেছেন, দেখুন আমি কতদিন ধরে বাড়িতে জেলখানার মত বন্দি, হাসপাতালে থাকতে হয়েছে আমাকে।
এর আগে ২০২০ সালে মে মাসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশানের বাসায় সাক্ষাৎ করেছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না। খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। এরপর থেকে তার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হচ্ছে। গুলশানের ভাড়াবাসা ফিরোজায় থাকছেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে সাধারণ কোনো নেতা দেখা করতে পারেন না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেশ কয়েকবার দলীয় প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্যরা প্রতিবছর দুই ঈদে দেখা করেন। এছাড়া কিছুদিন আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী ও ঢাকা মহানগর বিএনপির প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন তার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। বিএনপি নেতাদের বাইরে মান্না ছাড়াও গত বছরের ডিসেম্বরে ড. রেজা কিবরিয়া স্ত্রীসহ দেখা করেছিলেন।