স্টাফ রিপোর্টার- গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন তার ৯ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর ছয়দানাস্থা বাসভবনে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। এ সময় তার ছেলে সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার মায়ের পক্ষে ইশতেহারটি পাঠ করে শোনান।
নির্বাচনী ইশতেহারে জায়েদা খাতুন বলেন, আমি নির্বাচিত হলে সাধারণ মানুষের বাড়িঘরের আগামী পাঁচ বছরের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করা হবে। আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের পরিকল্পনা ও প্রণীত মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী তার অসমাপ্ত কাজ সম্পাদন করবো। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করবো।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রয়োজন অনুযায়ী এবং প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী চলাচল উপযোগী রাস্তা নির্মাণ করবো। সমগ্র গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় রাজেন্দ্রপুর থেকে শুরু করে টংগী আর আশুলিয়া হয়ে কোনাবাড়ি কাশিমপুর কাউলতিয়াকে সংযুক্ত করে আউটার রিংরোড নির্মাণের মাধ্যমে যানজট সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত সংযোগ ব্রিজ নির্মাণ করবো যাতায়াতের জন্য একাধিক বিকল্প রাস্তা এবং ব্রিজ নির্মাণ করবো।
নির্বাচনী ইশতেহারে জায়েদা খাতুন বলেন, গাজীপুরকে একটি আধুনিক স্মার্ট ক্লিন এবং গ্রিন সিটি হিসাবে গড়ে তুলবো। হোল্ডিং অনুযায়ী বিভিন্ন সেবা ডিজিটালাইজড করার লক্ষে ডিজিটাল হোল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়ন করবো এং স্মার্ট হোল্ডিং কার্ড দেবো। এতে নাগরিক অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে পারবেন। সিটিতে ই-ট্রেড লাইসেন্স চালু করবো। এতে নাগরিকরা অনলাইনে লাইসেন্সের আবেদন এবং নবায়ন করতে পারবে। যেই দিন আবেদন করা হবে সেই দিনই লাইসেন্স ইস্যু হবে। সিটি করপোরেশনের সেবা সহজতর করার জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার চালু করা হবে।
এ মেয়র প্রার্থী বলেন, আমি নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশন এলাকায় কর্মরত শ্রমিকদের তথ্য নিয়ে একটি ডিজিটাল ডাটাবেজ প্রণয়ন করবো। এতে শ্রমিকদের বিস্তারিত তথ্য লিপিবদ্ধ থাকবে। শ্রমিকদের সুচিকিৎসার জন্য সিটি করপোরেশনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। সেখানে নামমাত্র মূল্যে শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় ট্রেড ইউনিয়ন চালু করা হবে।
তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবো এবং মাদকের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে মাদক নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ডের বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে ওয়ার্ড ভিত্তিক উন্নয়ন ও সন্ত্রাস বিরোধী নাগরিক কমিটি গঠন করা হবে। মদ- জুয়া ও মাদক প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। মাতাল, জুয়াড়ি ও ভবঘুরেদের কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
সিটি করপোরেশনের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নাগরিকদের স্যার সম্বোধন করবে এবং প্রকৃত অর্থে সেবার মানসিকতা নিয়ে নাগরিকদের সেবা দিতে হবে। দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরূদ্ধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর, সচিবসহ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। সিটি করপোরেশনের বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করা হবে ক্রেতা-ভোক্তা ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
জাহাঙ্গীরের মা বলেন, ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি বাস্তবায়নের সিটি করপোরেশন এলাকা জুড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃক্ষরোপণ করা হবে। অসহায় মহিলাদের স্বাবলম্বীর লক্ষ্যে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠায় এককালীন পুঁজি অনুদান হিসাবে দেওয়া হবে। দুস্থ ও অসহায় নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে বিশেষ প্রণোদনা ঋণ দেওয়া হবে। বেকার সমস্যা সমাধানে বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পার্টটাইম কাজের ব্যবস্থা করা হবে।