স্টাফ রিপোর্টার- চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৭ জুন। ইতিপূর্বে চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামিলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও, হয়নি ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামিলীগের সম্মেলন।
জেলা আওয়ামিলীগের সম্মেলনের পূর্বে ফরিদগঞ্জে আদৌ কোনো সম্মেলন হবে কি না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে। একাধীক সূত্র জানিয়েছে জেলা আওয়ামিলীগের সম্মেলনের পরে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামিলীগের সম্মেলন হতে পারে।
তবে উপজেলা সম্মেলনের তারিখ নিয়ে সংশয় থাকলেও বসে নেই সম্ভাব্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা। নিজেদের প্রার্থীতার বিষয়ে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। কেউ কেউ পোস্টারিংসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের মধ্যদিয়ে নিজের প্রার্থীতার বিষয়ে জানান দিচ্ছেন। পাশাপাশি রাজনীতিতে নিজস্ব বলয়ের নেতাদের মাধ্যমে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীগণ।
এদিকে দীর্ঘসময় সম্মেলন না হওয়ায় অগোছালো হয়ে আছে উপজেলা আওয়ামিলীগ। যার ফলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে।
দলকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে তথা দলকে সু-সংঘটিত করতে হলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামিলীগের সম্মেলনের বিকল্প নেই বলে দাবী করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি খাজে আহমেদ মজুমদারকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দেখতে চায় তৃণমূল আওয়ামীগ। তৃণমূলের দাবি উপজেলা আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে খাজে আহমেদ মজুমদার নির্বাচিত হলে তার চৌকস নেতৃত্বে বর্তমান উপজেলার অবহেলিত আওয়ামিলীগ হবে সু-সংগঠিত।
খাজে আহমেদ মজুমদার ছাত্রলীগ থেকে বেড়ে ওঠা একজন নেতা। তিনি ১৯৯৯ সালে সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই ধারাবাহিকতায় ২০০৩ সালে ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য পদে নির্বাচিত হন, এবং ২০১০ সালের ২ জুন কাউন্সিলদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে বিপুল ভোটে ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের
সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।
তিনি ধাপে ধাপে যুবলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব প্রাপ্তির পর থেকেই সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্র ভূমিকা পালন করতে গিয়ে রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বদরপুর আলিম মাদ্রাসা, সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের কামতা ডিএস ফাজিল মাদ্রাসা, সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের মনতলা হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে বদরপুর আলিম মাদ্রাসা ও মনতলা হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন তার সভাপতির কার্যকালে নির্মিত হয়। গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদস্য হিসেবে শিক্ষার জন্য নিরলস কাজ করছেন তিনি।
এছাড়া করোনাকালীন সময়ে সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি’র নির্দেশে খাজে আহমদ মজুমদারের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গরিব, অসহায়, দরিদ্র এবং কর্মহীন প্রায় ১৪ হাজার পরিবারের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেন। ১৯৯৬ সালে বিএনপির একতরফা ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন প্রতিরোধ করার জন্য স্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন দিয়ে শুরু হয় তার রাজনীতির মাঠের বিচরণ। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে ফরিদগঞ্জ আসনের প্রার্থী সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমানের নির্বাচনে এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময়ে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে মিথ্যা মামলায় আসামী হয়ে কারাবরণ করতে হয় তাকে। একইভাবে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনেও সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমানের পক্ষে তিনি এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে ও সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার কারণে ষড়যন্ত্রমূলক দ্রুত বিচার আইনে বোমাবাজি, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামী হতে হয় তাকে। তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আঃ জলিল এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎকালীন দপ্তর সম্পাদক অ্যাডঃ আঃ মান্নান খান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমানের বিশেষ অনুরোধে নিম্ন আদালত চাঁদপুরে এসে এই মামলার বিজ্ঞ আদালতে চার্জ গঠনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন।
২০০৫-০৬ সালে বিএনপি-জামাতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত সকল কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ২০০৬ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং মুক্তির দাবিতে জরুরি অবস্থা ভঙ্গ করে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ২০১৩-১৪ সালের বিএনপি-জামাতের আগুন সন্ত্রাস পেট্রোল বোমার মাধ্যমে মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যাকালীন সময়ে অরাজক পরিস্থিতিতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে রাজপথে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও মাননীয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থী সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমানের নির্বাচনে ১১৭টি ভোট কেন্দ্রের কেন্দ্র পাহারা কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় নিশ্চিতে অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি। বর্তমানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ফরিদগঞ্জ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রখ্যাত সাংবাদিক মোঃ শফিকুর রহমানের আস্থাভাজন হিসেবে মেধা, সততা, পেশাদারিত্ব, দায়িত্বশীলতা ও অসম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা ছড়িয়ে দিতে ফরিদগঞ্জে অগোছালো নেতা-কর্মীদের গোছাতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে খাজে আহমেদ মুজমদার আপোসহীন ও অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক, সামাজিক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ আপামর সকলের কাছে বিশেষভাবে গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য মানুষ হিসেবে পরিচিত ।
খাজে আহমেদ মজুমদার উপজেলা আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রার্থী হওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি, এ জাতির মহানায়ক জাতি পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করে, লালন করে, গণতন্ত্রের মানসকন্যা, জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজীবন বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে মার্কা নৌকার পক্ষে অবিচল থেকে অসম্প্রদায়িক সুখী সমৃদ্ধ উন্নত দেশ গড়তে ভূমিকা রাখতে চাই। ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগের পুনর্জাগরণে তরুণ ও যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে চাই।
আওয়ামী লীগের সরকারের গত ১৪ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়ন ও স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতি তরুণ ও যুবকদের আকৃষ্ট করতে হবে। ১৯৭০ সালে সারাদেশের মতো ফরিদগঞ্জে যেমন আওয়ামী লীগের জোয়ার ছিল, আমি আবারো সেই জোয়ার বইয়ে দিতে চাই। এছাড়া আমার প্রত্যাশার অনুকূলে মাননীয় নেত্রী, দলের সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, জেলা আওয়ামী লীগ, ফরিদগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও ত্যাগী নেতৃবৃন্দ, সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহপাঠী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সফল সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ফরিদগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমানের সহযোগিতা নিয়ে ফরিদগঞ্জের আওয়ামী লীগকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই।
এসকল সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রশংসনীয় কর্মকাণ্ডের কারনে স্থানীয় চাঁদপুর ৪ ফরিদগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য প্রখ্যাত সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শফিকুর রহমান(এমপি) ও তৃণমূল আওয়ামিলীগ খাজে আহমেদ মজুমদারকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চান এবং মনে করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এই মুহূর্তে খাজে আহমেদ মজুমদারের বিকল্প নেই।