স্টাফ রিপোর্টার- ফরিদপুরে নির্মাণাধীন সেতুতে কাজ করার সময় মাটি ধসে পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আহত হয়েছে আরও চারজন। বুধবার দুপুর ১টার দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সদরপুর উপজেলার জমাদারডাঙ্গী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ফরিদপুর সদর উপজেলার কবিরপুর এলাকার মো. অন্তর (২০), কুজুকদিয়া এলাকার জুলহাস মীর (২৪) এবং বাগেরহাট জেলার উদয়পুর গ্রামের মো. জাবের (২৮)। এছাড়াও আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। তাদের সদরপুর ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, জেলার সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের জমাদার ডাঙ্গী এলাকায় একটি সেতুর কাজ করছিল। এ সময় শ্রমিকরা সেতুর নিচের অংশের রড বাধাঁর কাজ করার সময় সেতুর পাশে থাকা মাটির স্তুপ থেকে মাটি ভেঙে পড়ে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। চারজনের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়। সদরপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাষ্টার আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ছুটে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করি।
অপরদিকে, এলজিইডির অর্থায়নে (জম্মাদার ভায়া সদরপুর) সড়কের এই সেতুর নির্মান কাজ করছে মেসার্স আসিফ ইমতিয়াজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তিনি ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফের ভাই।
সেতুতে কর্মরত শ্রমিক সরদার জানান, আমরা বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানালেও তারা মাটি সরানোর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। মাটির পাশে গাইড দেয়ার কথা বলা হলেও তারা করেনি। তারা উল্টো আমাদেরকে হুমকি দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছিল।
সদরপুরের এলজিইডির প্রকৌশলী আজিমউদ্দিন জানান, এই সেতুর নির্মাণ কাজ করছে মেসার্স আসিফ ইমতিয়াজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর দরপত্রের মূল্য নির্ধারণ ছিল চার কোটি ১৬ লাখ টাকা। এছাড়া আমারা নিয়মিত কাজের তদারকি করেছি। তারপরেও বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখা হবে কেন বা কি কারণে এমন ঘটনা ঘটল।
এ বিষয়ে সদরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, মাটিচাপা পড়ে ঘটনাস্থলে তিন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।