স্টাফ রিপোর্টার- নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটিকে দুই মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ সময় আদালত বলেছেন, বারবার সময় দেওয়া হবে না। দুই মাসের মধ্যেই তদন্ত শেষ করতে হবে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনোজ কুমার ভৌমিক। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
মঙ্গলবার মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে তদন্ত কমিটির পক্ষে দুই মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। এ সময় তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এভিডেন্স সংগ্রহ করেছে। তদন্ত শেষ করতে দুই মাস সময় প্রয়োজন। পরে আদালত দুই মাস সময় দেন।
গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে প্রতারণার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয় বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এরপর মস্তিষ্কে গুরুতর রক্তক্ষরণে অসুস্থ হয়ে ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন বলে দাবি করে র্যাব।
তবে স্বজনদের অভিযোগ, হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। দায়িত্বরত চিকিৎসক সুলতান জেসমিনের মাথাজুড়ে একাধিক ইন্ট্রাক্রানিয়াল রক্তক্ষরণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এফ এম শামীম আহাম্মদ সুলতানার মাথার বাইরের দিকে ক্ষত থাকার কথাও জানান।
পরে পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে বলা হয়, তারা আটকের বিষয় সম্পর্কে অবগত ছিল না, বরং গণমাধ্যম থেকে তারা তথ্যটি জানতে পেরেছে।
আরও জানা গেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে মামলায় জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়, সেই মামলা দায়ের করা হয়েছে তাকে আটকের প্রায় ৩১ ঘণ্টা পর ২৩ মার্চ বিকেলে এবং মামলাটি দায়ের করেছেন রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার অফিসের পরিচালক এনামুল হক।
পরে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চেয়ে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িত র্যাব সদস্যদের দায়িত্ব থেকে আপাতত সরিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর তদন্ত শেষ করে কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।