স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে শতকরা ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগের কারণে হয় বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। খাদ্যে ভেজাল, ব্যালেন্সড ফুড না খাওয়া ও তামাকজনিত কারণে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অসংক্রামক রোগী বাড়ছে বলে এ সময় জানান তিনি।
রোববার (১৮ জুন) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি) এর রিসার্চ ডিসিমিনেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে দেশের সব উপজেলার এনসিডি কর্নার স্থাপন করা হচ্ছে। সংক্রমক রোগ যেগুলো আছে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আমরা সক্ষম হয়েছি। কলেরা, ডায়রিয়া এগুলো আগে অনেক বেশি ছিল, তবে তা এখন খুবই কম। আর এর সব থেকে বড় প্রমাণ হলো কোভিড নিয়ন্ত্রণ।
তিনি বলেন, খাদ্যে ভেজাল, ব্যালেন্সড ফুড না খাওয়া ও তামাকজনিত কারণে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি অসংক্রামক রোগী বাড়ছে। দেশে পাঁচ থেকে দশটির বেশি সংক্রামক রোগ নেই। তবে ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগের মতো অসংক্রামক রোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যা এখন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন অসংক্রামক রোগ বাড়ছে, তাই বর্তমানে লক্ষ্য হওয়া উচিত ক্যানসার, ডায়বেটিসের মতো জটিল রোগগুলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া।
মন্ত্রী বলেন, দেশের চিকিৎসা খাতকে বিকেন্দ্রীকরণ করে আটটি বিভাগীয় শহরে হাসপাতাল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলা হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। বিভাগীয় শহরে বার্ন ইউনিট জরুরি হয়ে পড়েছে। দেশে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে। আমাদের এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে।
দেশে বর্ষা মৌসুমে সাপের ছোবলের ঘটনা বেশি ঘটে। এ সময় সাপে কাটার শিকার বেশি হয় গ্রামের মানুষ। অথচ উপজেলা পর্যায়ে দেশের বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাপের বিষের প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) নেই। এমন বাস্তবতায় সব হাসপাতালে যথেষ্ট প্রতিষেধক সরবরাহ ও রোগীর সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতের জন্যও বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রতিবছর প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ দেশে সাপের কামড়ে মারা যান। সাপের কামড়ের প্রতিষেধক তৈরি করা হবে। আমরা নিজেরাই এ বিষয়ে কাজ করছি এবং এ বিষয়ে কার্যক্রম চলমান আছে। সাপের কামড়ে মৃত্যু নন কমিউনিকেবল ডিজিজ (ছোঁয়াচে নয় এমন রোগ)। এমনিতেই এমন নন কমিউনিকেবল ডিজিজে অনেক মৃত্যু হচ্ছে। সাপের কামড়ে যেন প্রাণহানি না হয়, সেজন্য উপজেলা পর্যায়সহ সবখানে অ্যান্টিভেনম ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু অ্যান্টিভেনম নিশ্চিত করলেই হবে না, পাশাপাশি প্রশিক্ষিত জনবল থাকতে হবে। মাঝে মধ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করতে হবে।
এ সময় দেশে বিভাগীয় পর্যায়ে নতুন যে হাসপাতালগুলো হচ্ছে সেখানে চার হাজার বেড যুক্ত হবে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা মহাপরিচালক ড. টিটু মিয়াসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তারা উপস্থিত ছিলেন।