বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক, ২০২৩ এ প্রশাসনের ২৮ জন কর্মকর্তা ছাড়াও সরকারি দুটি প্রতিষ্ঠানকে ভূষিত করেছে সরকার। সোমবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পদকসহ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ দিন ব্যক্তিগত অবদানের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের ২ লাখ টাকা ছাড়াও দলগত অবদানের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের ৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। এরমধ্যে দলগত অবদানের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে দলের প্রত্যেক সদস্যকে স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট ছাড়াও নগদ পুরস্কারের পাঁচ লাখ টাকা সদস্যদের মধ্যে সমান হারে বণ্টন করা হয়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপদক দেওয়া হয়।
এ বছর বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক পাওয়া সরকারি প্রতিষ্ঠানদুটি হলো- খাদ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। এরমধ্যে ‘নীতি ও প্রশাসনিক পদ্ধতির সংস্কার’ শ্রেণিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ‘গবেষণা ও মানবকল্যাণে এর ব্যবহার’ শ্রেণিতে এ বছর এই পদকে ভূষিত হয়েছে।Prime-Minsterএছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে ‘সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা’ শ্রেণিতে দলগতভাবে এই পদক পেয়েছেন লক্ষ্মীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব) মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন আহম্মদ কবীর, লক্ষ্মীপুরের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) ও বর্তমানে বিসিএস প্রশাসন অ্যাকাডেমির উপপরিচালক নূর-এ-আলম, সদর উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন (বর্তমানে বিএসটিআই’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) এবং রায়পুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনজন দাশ।
পাশাপাশি এ বছর ‘উন্নয়ন প্রশাসন’ শ্রেণিতে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক পেয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব) প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, খাগড়াছড়ির সাবেক এডিসি (বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব) কে এম ইয়াসির আরাফাত, খাগড়াছড়ি জেলার সাবেক সহকারী কমিশনার (বর্তমানে মাগুরার মহম্মদপুরের সহকারী কমিশনার-ভূমি) বাসুদেব কুমার মালো ও খাগড়াছড়ির সাবেক সহকারী কমিশনার (মাগুরা জেলার সহকারী কমিশনার) শেখ নওশাদ হাসান।
এদিকে, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন’ শ্রেণিতে শরীয়তপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার) মো. পারভেজ হাসান, শরিয়তপুরের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সাবেক উপ-পরিচালক (বর্তমানে অধিদফতরের উপপরিচালক) মো. মতলুবর রহমান, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ইউএনও কামরুল হাসান সোহেল এবং জাজিরা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন এ বছর বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকে ভূষিত হয়েছেন।অন্যদিকে, ‘পরিবেশ উন্নয়ন’ শ্রেণিতে হবিগঞ্জের সাবেক ডিসি (বর্তমানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব) ইশরাত জাহান, হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে সাতক্ষীরা নির্বাহী প্রকৌশলী) মো. শাহানেওয়াজ তালুকদার, হবিগঞ্জের সহকারী কমিশনার নাভিদ সারওয়ার ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী দিলীপ কুমার দত্ত এবার এই পদক পেয়েছেন।
এছাড়াও গাইবান্ধার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) উপপরিচালক মো. আবদুস সবুর, গাইবান্ধা সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. তাহাজুল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জের উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আবুল কামাল আজাদ, গোবিন্দগঞ্জের উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক ও পলাশবাড়ির উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান ‘মানবসম্পদ উন্নয়ন’ ক্যাটাগরিতে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক, ২০২৩ এ ভূষিত হয়েছেন।
পাশাপাশি ‘দুর্যোগ ও সংকট মোকাবেলা’ শ্রেণিতে ব্যক্তিগতভাবে এ বছর বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক, ২০২৩ পেয়েছেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান। সেই সঙ্গে ‘সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ শ্রেণিতে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদি উর রহিম জাদিদ এবার এই পদক পেয়েছেন। আর ‘অপরাধ প্রতিরোধ’ শ্রেণিতে র্যাব-১১ এর জঙ্গি সেলের সাবেক ইন্টেলিজেন্স অফিসার ও কমান্ডার (বর্তমানে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার) মির্জা সালাহ উদ্দিন, ‘জনসেবায় উদ্ভাবন’ শ্রেণিতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা এবং ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ শ্রেণিতে নওগাঁর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নাজমুল হক এ বছর বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকে ভূষিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা, মননশীলতা ও উদ্ভাবনী প্রয়াসকে উৎসাহিত করতে ২০১৬ সাল থেকে জনপ্রশাসন পদক প্রদান করে আসছে সরকার। এরমধ্যে গত বছর থেকে এই পদকের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক করা হয়।