আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলকে বিজেপি জানিয়েছে, চীন ও জামায়াতে ইসলামী ভারতের জন্য কোনো ঝুঁকি নয়। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও আন্তরিক। আগামী দিনেও ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, আমরা ৭ তারিখে ভারতীয় জনতা পার্টির আমন্ত্রণে ভারত সফরে যাই। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ, অর্থ দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়েছে। আর বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অনেক উঁচুতে।
ভারত সফরের প্রথম দিনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রেসিডেন্ট জেপি নাড্ডা, জেনারেল সেক্রেটারি বিনোদ তড়ে ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের পৃথক পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিজেপি প্রেসিডেন্ট নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে আঞ্চলিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জঙ্গিবাদ দমন ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলকে বিজেপি প্রেসিডেন্ট জেপি নাড্ডা বলেন, তার দল এ অঞ্চলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সন্ত্রাস দমনের স্বার্থে অতীতের মতো আগামীতেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
বিজেপির জেনারেল সেক্রেটারি বিনোদ তড়ে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের বর্তমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের দুই বন্ধুপ্রতীম দল এ সম্পর্ক অটুট রাখতে কাজ করে যাবে।
ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দুই দেশের মধুর সম্পর্ক যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি উচ্চতায়।
ভারতীয় রাজ্যসভার নেতা ও বাণিজ্যমন্ত্রী শ্রী পীযূষ গয়াল আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করেন যে, খাদ্যশস্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টি ভারত কার্যকরভাবে বিবেচনা করবে।
একইসঙ্গে ভারত যাতে বাংলাদেশ থেকে আরও পণ্য আমদানি করতে পারে, সেজন্য তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের কাছ থেকে সক্রিয় সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
এ সময় বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের তালিকা প্রস্তাবের অনুরোধ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর ভারতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণের বিষয়টি উল্লেখ করেন।
৬ আগস্ট থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ভারত সফর করে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলটি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে সফরে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আরমা দত্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ও কার্যনির্বাহী সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধিদলের পাঁচ সদস্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও উপ-প্রচার সম্পাদক আব্দুল আওয়াল শামীম।