ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার কাজ চালানো হচ্ছে। আমি, আমার কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা কাজ করছি। তবে শুধু সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। জনগণকে সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে স্কুলে স্কুলে প্রচারাভিযানে যাচ্ছি।
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কাফরুলে উত্তর কাফরুল হাই স্কুলে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমাদের ছোটমনিদের জানাতে চাই, মশার কামড় মানুষের জন্য ক্ষতিকর। এ ব্যাপারে তাদেরকে জানাতে পারলে, সচেতন করতে পারলে মশার কামড় থেকে রক্ষা পাবে। বইটিতে চিত্রাঙ্কন করার মাধ্যমে শিশুরা মশার কামড় থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে শিখতে পারবে।
মেয়র আতিক বলেন, আমরা আমাদের শিশুদের সুপার হিরো বানাতে চাই মশার বিরুদ্ধে। শিশুরা যদি মশার বিষয়ে জানতে পারে এবং কামড় থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারে, তবে আমরা ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ করতে পারবো। শিশুরা মশার প্রজননস্থল, ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানলে পরিবারে এর প্রভাব পড়বে। সিটি কর্পোরেশন থেকে বইটি ঢাকা উত্তরের সব প্রাইমারি স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
আর্টবুকটির সাথে রঙ পেন্সিলও বিতরণ করা হবে বলে জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের আহবান করে মেয়র বলেন, তোমরা বাবা, মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি, নানা-নানিসহ আত্মীয় স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীদের জানাবে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। বাসাবাড়ি, বারান্দা, ছাদ সবজায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, স্কুলে স্কুলে প্রচারাভিযান ও আর্টবুক বিতরণের ফলে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে। স্কুলে এসে দেখলাম সব শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিচ্ছে তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা জেনে গেছে এডিস মশা কোথায় জন্মায়। এডিস মশা নিধনে করণীয় কি তারা জেনে গেছে।
মেয়র আরও বলেন, আমরা ডিএনসিসি থেকে তিন স্তরে কাজ করছি। কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্স বড় বড় ভবন ও নির্মাণাধীন ভবনের ডাটাবেইজ তৈরি করছে। আমি কাউন্সিলরদের নির্দেশনা দিয়েছি যেন নির্মাণাধীন ভবনের মালিককে চিঠি দিতে। আমরা বসে নেই। কাজ করে যাচ্ছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
স্কুলে প্রচারাভিযান শেষে ডিএনসিসি মেয়র ইব্রাহিমপুরে সিটি পার্ক চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এন্ড কনভেনশন সেন্টারে এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় ১৬নং ওয়ার্ডের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক, ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেন। ডিএনসিসি মেয়র মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সকলকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান করেন।
মতবিনিময় সভা শেষে ডিএনসিসি মেয়র উপস্থিত সকলকে নিয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের সকল শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন।
প্রচারাভিযানে ও মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. এ.কে.এম শফিকুর রহমান, উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর সাহিদা আক্তার শীলা প্রমুখ।