রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে ১০ পুলিশসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২০ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান রয়েছেন।
শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত থেমে থেমে এই সংঘর্ষ চলে। বর্তমানে মিঠাপুকুরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিবাদমান দুই পক্ষের আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় পৃথকস্থানে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান এমপির পক্ষ উপজেলা পরিষদ গেটের সাথে অডিটোরিয়াম হলে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকারের পক্ষ রংপুর-ঢাকা চারলেন মহাসড়কে ওভার ব্রিজের নিচে একই সময়ে বিকেলে আলোচনা সভার আয়োজন করে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ একটি মিছিল নিয়ে সভাস্থলে যাচ্ছিল। উপজেলা পরিষদ গেট অতিক্রম করার সময় অন্য পক্ষের (এমপি পক্ষ) নেতাকর্মীদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে দুই পক্ষের শত শত নেতাকর্মী লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। এ সময় উপজেলা সদরে জনসাধারণের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মুহূর্তেই সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কে লোকজন দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে।
পুলিশ সংষর্ষ থামাতে লাঠিচার্জ করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পরও সংষর্ষ চলে। দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কমপক্ষে পুলিশসহ ৪০ জন নেতাকর্মী ও পথচারী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে শাহিদ হাসান প্রিন্স (২৮), মমিনুল ইসলাম নাজমুল (২০), নাইম (২৪), আ. রউফ (৭০), নাজমুল (২৬), রাদ মিয়া (১৮), নুরুজ্জামান (২৮), শাহনাজ (৩০), সুবর্ণা (২৫), ফজিলা বেগমের (৩০) অবস্থা গুরুতর। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানসহ ১০ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। তাদেরকেও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। রাত ৭টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে পুরো উপজেলা পরিষদ ও মহাসড়ক এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছিল।
মিঠাপুকুর থানার ওসিকে ফোন দেয়া হলে এসআই মুহিবুর রহমান ফোন রিসিভ করে বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে ওসিস্যারসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।