বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় হামুন আরও বেশি শক্তি সঞ্চয় করে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় উত্তাল রয়েছে মেঘনা। সেই সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও ধমকা হাওয়া বয়েই চলছে। আতংকে রয়েছে হাতিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়ীর পাশে অবস্থান করা সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে সকাল থেকে হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাট থেকে নলচিরা, তমরদ্দি, চরচেঙ্গা, জাহাজমারাসহ হাতিয়া-চট্টগ্রাম, হাতিয়া-ঢাকা রুটে সব নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। এতে হাতিয়ার সঙ্গে দেশের অন্যান্য স্থানের নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
তবে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার তমরোদ্দি ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে গেলেও বিকেলের দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে হাতিয়ার উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে আসবে না বলে জানিয়েছেন তমরোদ্দি লঞ্চ ঘাটের দায়িত্বরতরা।
এদিকে নিঝুমদ্বীপে সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি ও মৃদু বাতাস হচ্ছে। দোকানপাটে মানুষ নেই। বেশিরভাগ মানুষ ঘরে বসে আছে। ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের কথা শুনে আতংকে আছে সাধারণ মানুষ। কারণ প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে নিঝুমদ্বীপের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আতংকও বাড়ছে দ্বীপের মানুষের মাঝে।
হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত চলছে। ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় হাতিয়া উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে সাগর ও নদী উত্তাল থাকায় হাতিয়ার সঙ্গে সারাদেশের সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে নলচিরা ও চেয়ারম্যানঘাটে অনেক যাত্রী আটকা পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৫টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রয়েছে। উপকূলীয় এলাকার কোথাও প্লাবিত হওয়ার কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার জন্য।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী পর্যবেক্ষক আজরুল ইসলাম বলেন, হামুনের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে। হাতিয়াসহ উপকূলীয় এলাকায় সোমবার ৩৭ মিলিমিটার এবং আজ ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।