মৌলভীবাজারের হিলালপুর এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই। আঞ্চলিকভাবে এই ষাঁড়ের লড়াই ডেকারমাইর হিসেবে জনপ্রিয়। যা দেখতে জড়ো হন সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকার নানা বয়সের হাজারো মানুষ।
আয়োজকরা বলছেন, হারিয়ে যেতে বসা সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই তাদের মূল লক্ষ্য।
এ লড়াইলে মৌলভীবাজার ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে চল্লিশটি ষাঁড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সমানে সমানে শুরু হয় লড়াই। এ সময় মাঠের চারপাশে চলতে থাকে উৎসুক দর্শকদের উল্লাস। উত্তেজনা আর ভয় নিয়ে দর্শকরা হাজার বছরের এই ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই উপভোগ করেন। লড়াই শুরু হবার আগেই দর্শকের সমাগমে মাঠ ভরে যায়।
আমন ধান কাটার পর ক্ষেতের জমিতে চারদিকে হাজারো মানুষের অপেক্ষা। সকাল থেকে লড়াই দেখার জন্য আসতে থাকেন উৎসুক দর্শক।
বিচিত্র নামের ষাঁড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কাঁটাতার, হেলাল চার টেঁটা, সিন্দুর কালী, বিশ্বনাথী কিং, কালা বাহাদুর, চটংগিজ, রেইচার, রাঙ্গা ভাই, দয়াল, বাহুবলীম সোনার ময়না, ইস্টার বেঙ্গল, ডি সি রেড়, স্টিল, ভয়ংকর মুদি, সরকি তালুকদার, দেশ পাগলা, পাগলা ভাই, নিউকালী ইত্যাদি।
লড়াইয়ে অংশগ্রহণকারী ষাঁড় যেন ভয় না পায় সেজন্য প্রতিটি দলেই কয়েকজন লাঠি নিয়ে লড়াইয়ের পাশে ষাঁড়কে সাহস দিয়ে যান। এছাড়া এক একটা ষাঁড়ের গায়ে তাবিজ কবজসহ একজন করে গুনীন থাকে। তিনি লড়াই চলাকালে মাটিতে জোরে হাত দিয়ে চাপড়াতে থাকেন। এভাবে চলতে থাকে লড়াই।
হারিয়ে যাওয়া এই ষাঁড়ের লড়াইয়ে মৌলভীবাজারসহ আশপাশের জেলা সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ থেকে ষাঁড় নিয়ে আসেন মালিকরা।
ষাঁড়ের মালিকেরা জানালেন, গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই ধরে রাখার পাশাপাশি মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য তারা ষাঁড় নিয়ে এসেছেন। এছাড়া ষাঁড় বিজয়ী হলে অনেক দামে বিক্রি হয়ে যায়।
প্রবাসীরা বলছেন, গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যের টানে এই ষাড়ের সরাসরি দেখতে সন্তানদে নিয়ে আসে। এতে সন্তানদের দেশে প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়।