স্টাফ রিপোর্টার: বাজারে স্বস্তি ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও ‘দামের উত্তাপ’ এখনও আগের মতোই। ভোক্তাদের অভিযোগ চাল, পেঁয়াজ ও আলুতে শুল্ক প্রত্যাহার করা হলেও তার প্রভাব নেই বাজারে। এসব তাদেরকে বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের ভাষ্য, যেমন দামে তারা পণ্য কিনছেন ঠিক সে অনুপাতেই বিক্রি করছেন।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু ও পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় আরও বেড়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।
রসুনের বাজারও সুবিধার নয়। আমদানি রসুন কেজি প্রতি ২৪০ টাকা বিক্রি হলেও দেশি রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়।
শীতের আগাম সবজি চলে আসায় সুখবর রয়েছে সবজির বাজারে। দাম কিছুটা কমেছে। কাঁচা মরিচের দামও নিম্নমুখী। খুচরায় কেজি প্রতি মানভেদে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মানভেদে বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল, কাটারি, জিরাশাইলসহ সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮২ টাকায়। এ ছাড়া বিআর-২৮ ও ২৯, মিনিকেট, পাইজামসহ মাঝারি মানের চাল ৬৫ থেকে ৭০ এবং গুটি, স্বর্ণা, চায়না ইরিসহ মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৮ টাকায়।
টিসিবি বলছে, এখন চালের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ থেকে ১৩ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ২৩ শতাংশ পর্যন্ত। পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে আলু ও পেঁয়াজের কোনো সংকট তারা দেখছেন না। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এসবের দাম বাড়াচ্ছেন। পরিস্থিতি অস্থির করে তুলছেন।
ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, হিমাগার গেটে আলুর দর বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। আর বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ সংকটে দেশি ও আমদানি দুই ধরনের পেঁয়াজেরই দাম বেড়েছে। তবে এই অবস্থা বেশিদিন থাকবে না।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, শুল্ক কমানোর পর এর সুবিধা একটি পক্ষ নিয়ে নিচ্ছে, ভোক্তারা পাচ্ছেন না। শুল্ক সুবিধা কারা নিয়ে যাচ্ছে, সরকারের পক্ষ থেকে এটি কঠোর মনিটরিংয়ে রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার এখন শুধু খুচরা পর্যায়ে তদারকি করছে। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা- এই তিন স্তরেই তদারকি করতে হবে, যা হচ্ছে না।