নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাপটে বেকায়দায় চট্টগ্রামে অন্তত সাতটি আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এসব আসনে অন্য দলের হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকলেও, স্বতন্ত্রদের কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে নৌকার প্রার্থীদের। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে থাকাকে দলের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বলছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাবি, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর করতেই মাঠে আছেন তাঁরা।
চট্টগ্রামে সংসদীয় ১৬টি আসনের দুটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে বাকি ১৪টির অর্ধেকেই নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে আছেন নিজ দলেরই হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
মীরসরাই, ফটিকছড়ি, বন্দর, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া এবং পটিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে চারজন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, একজন বর্তমান সংসদ সদস্য এবং একজন সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
মীরসরাইয়ে নৌকার প্রার্থী মাহবুব উর রহমান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহেল গিয়াস উদ্দিন, ফটিকছড়িতে নৌকার প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার আর স্বতন্ত্র প্রার্থী সনিআবু তৈয়ব, ফটিকছড়িতে নৌকার প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার আর স্বতন্ত্র প্রার্থী সনিআবু তৈয়ব, বন্দরে নৌকার প্রার্থী এম এ লতিফ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন, বাঁশখালীতে নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান, চন্দনাইশে নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল জব্বার চৌধুরী, সাতকানিয়া নৌকার প্রার্থী আবু রেজা মো. নেজামুদ্দীন নদভী এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব, পটিয়ায় নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সামসুল হক চৌধুরী।
এদের প্রত্যেকেরই আছে শক্তিশালী কর্মী–সমর্থক, যা ভোটের ফলাফল পাল্টে দিতে পারে। নৌকার প্রার্থীদের অভিযোগ, দলের আদর্শের বিরুদ্ধে নির্বাচন করছেন এসব স্বতন্ত্র প্রার্থী।
চট্টগ্রাম-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল বলেন, ‘যারা নিজের স্বার্থের জন্য দলকে ব্যবহার করে এ পর্যায় এসেছে, তারা বিদ্রোহ করছে। তারা দলের সঙ্গে বেইমানি করছে। এর মাধ্যমে তারা উন্নয়নের ধারাকে ব্যহত করার চেষ্টা করছে।
চট্টগ্রাম-১২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘যারা ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে কাজ করে, তারা দলের প্রতি অবশ্যই বিচলিত হবে না। তারা দলের সিন্ধান্ত মেনে চলবে।’
নৌকার প্রার্থীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বলছেন, দলের হাই-কমান্ডের নির্দেশ এবং কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে নির্বাচনের মাঠে আছেন তাঁরা।
চট্টগ্রাম-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আগে কঠিন বার্তা ছিল নৌকার বাইরে গিয়ে কেউ নির্বাচন করতে পারবে না, কিন্তু নেত্রী এইবার সেই ঘোষণা দেননি।’
চট্টগ্রাম-১১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন বলেন, ‘সাধারণ জনগণ কিন্তু আমাকে প্রার্থী হওয়ার জন্য বলেছে। ওনাদের মতামত নিয়ে আমি প্রার্থী হয়েছি। এ ছাড়া প্রাধানমন্ত্রী যে ঘোষণা বা নির্দেশ দিয়েছেন সে অনুযায়ী আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।’