তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো অসুবিধা নেই জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আশা করছি ভারতের নির্বাচনের পর এ নিয়ে একটা সমাধানে পৌঁছাতে পারব।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভারত সফরের শেষ দিন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপদূতাবাস আয়োজিত সান্ধ্যকালীন শুভেচ্ছা ও সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসসহ মিশনের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, এ নিয়ে তাদের কোনো অসুবিধা নেই। এখানে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের, আমরা সেটি নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি নিশ্চয়ই ভারতের নির্বাচনের পর এ নিয়ে একটা সমাধানে পৌঁছাতে পারব এবং সেভাবেই আলোচনা হয়েছে।
এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে কোনো কথা বলবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, এটা ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদেরকে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বিজনেস করতে হবে। তারা এখন কিভাবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া করবে সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের খুব আত্মিক এবং উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে। যে সম্পর্ক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, আমরা বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ সংকট কিভাবে এই অঞ্চলে প্রভাব পড়ছে, আমাদের দেশেও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড সদস্য অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ভারতেও ঘটেছে। এই ইস্যু সমাধানে কিভাবে একযোগে কাজ করা যায়, একই সঙ্গে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কিভাবে ফেরত পাঠানো যায় সে ব্যাপারেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা একাধিক ভোগ্য পণ্যের জন্য ভারতের ওপর নির্ভরশীল। পিঁয়াজ, রসুন, ডালসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানি করতে হয়। কিন্তু মাঝেমধ্যে ভারতের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনের চাহিদার কারণে অন্য আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে।
এ বিষয়ে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সে ক্ষেত্রে এ সমস্ত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি কোটা নির্ধারণ করা যায়। আগামী মাসের রমজানের আগে পেঁয়াজ এবং চিনি যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে চাহিদা অনুযায়ী আমদানি করতে পারি সেই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বাণিজ্য ঘাটতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত থেকে আমরা ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি করি আর রপ্তানি করি দুই বিলিয়ন ডলারের কিছুটা বেশি। এই বাণিজ্য ভারসাম্য যাতে কমানো যায় সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।