সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সিয়াম হোসেনকে ১৪ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন কলকাতার বারাসাতের একটি আদালত। শনিবার (৮ জুন) বিচারক সঙ্গীতা লেটের আদালতে কলকাতা পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করে এ রিমান্ড দেন। এর আগে শুক্রবার (৭ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সিয়াম হোসেনকে হেফাজতে নেয় কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশ (সিআইডি)।
তিনি জানান, সংসদ সদস্য আনার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সিয়াম নেপালে পালিয়ে ছিলেন। পরে তাকে নেপাল পুলিশ আটক করে। কলকাতার সিআইডি তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এর আগে গত ২৬ মে আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে কলকাতায় যায় ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল। এরপর সিয়ামকে নেপালে আটকের খবর পেয়ে ১ জুন সেখানে উড়ে যান ডিবির হারুন। ৪ জুন নেপাল থেকে ফিরে শাহজালাল বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে নেপালের চুক্তি রয়েছে। ভারতীয় পুলিশের কাছে সিয়ামকে দিলেও হবে। কারণ, তাকে নিয়ে আলামত উদ্ধারসহ তদন্তকে এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন আনোয়ারুল আজিম। বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পাশের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার অভিযোগে গ্রেপ্তার সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাহাজি ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে দুদফা রিমান্ডে নেয়া হয়। আর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদকে ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বারাসাতের আদালত। এছাড়া বর্তমানে কলকাতা পুলিশের হেফাজতে থাকা সিয়ামের বিরুদ্ধে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আমানের সহযোগী সাইফুল মেম্বারকেও রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।