Search
Close this search box.

লালমনিরহাটে নিম্নাঞ্চলে বন্যা, ভোগান্তি চরমে

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলে বন্যার দেখা দিয়েছে। বর্তমানে তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি কমলেও নিম্নাঞ্চলে এখনও পানিবন্দি রয়েছে অন্তত ৩ হাজার পরিবার। গত ৩ দিন থেকে পানিবন্দি থাকা এসব মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে।

জানা গেছে, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গরীবুল্লাহ পাড়া, বারোঘরিয়া, গোবরধন, সদর উপজেলার কালমাটি এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িঘরে পানি থাকায় বন্ধ রয়েছে রান্না। এছাড়া এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট। এদিকে পানিবন্দি হয়ে পড়া এসব নিম্নাঞ্চলে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। কৃষকের ধান, বাদাম ও মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতও তলিয়ে গেছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটির বাসিন্দা শফিয়ার রহমান বলেন, গত চারদিন ধরে নদীর পানি বাড়ছেই। তিনদিন হলো বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। রান্না করার জন্য চুলা জালানো এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এছাড়া খাবার পানিও সংগ্রহ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

একই এলাকার বাসিন্দা বদিউজ্জামান জানান, চরের জমিতে চাষ করা বাদাম এখনও ঘরে তোলা হয়নি। পানির স্থায়িত্ব আর একদিন থাকলে বাদামগুলো পচে যাবে।

সদর উপজেলার পাকারমাথার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, নদী, চর ও গ্রামে পানি থাকায় গরু ছাগল রাস্তায় রেখেছি। নিজেদের খাবারের কষ্ট তো আছে, গরু ছাগলের খাবারও সংগ্রহ করা যাচ্ছে না।

জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের আবলার বাজার এলাকার বাসিন্দা রুপন মিয়া বলেন, তিনদিন ধরে বাড়িতে পানি। স্ত্রী সন্তানকে শশুর বাড়িতে রেখে এসেছি। শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটছে। প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেন আদিতমারী উপজেলার বারোঘরিয়া, গোবরধনসহ তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দি থাকা পরিবারের লোকজন।

শুক্রবার (২১ জুন) বিকেল ৩টায় লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১.৬৮ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার নিচে। তবে তিস্তার রেলসেতু পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ২৯.৩০ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তাসহ লালমনিরহাটের সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদীতে পলি পড়ে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পানি কমে গেলে কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিতে পারে। নদী ভাঙন ঠেকাতে জরুরি হিসেবে জিওব্যাগ ফেলা হবে। তবে পানি আজ সকাল থেকে কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আগামী ২৪ জুন থেকে আবারও তিস্তার পানি বাড়তে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ