স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দীন নাছিম। তিনি বলেছেন, ‘নির্বিচারে মানুষ হত্যা জাতির জন্য গভীর বিপর্যয় ডেকে আনবে। আমরা এ হত্যার মহোৎসব বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে নৃশংস, বর্বরতার প্রদর্শনী আর দেখতে চাই না।’
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা বলেন বাহাউদ্দীন নাছিম। বিবৃতিতে ২০১৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা পরিকল্পিতভাবে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মাসুদের পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন করে ফেলে উল্লেখ করে বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, ‘যেখানে গুরুতর অপরাধের জন্যও সাধারণত কোনো আদালতেই পঙ্গু ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় না সেখানে মাসুদকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার অভিপ্রায়ে যাবতীয় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিসর্জন দেওয়ার যে চর্চা চলছে তা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, বলেন, ‘প্রথমে তাকে বস্তায় ভরে পেটানো হয়। এরপর রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে তাকে ফেলে রাখা হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে এ ধরনের পৈশাচিক কর্মকাণ্ড আইনের শাসনের সুস্পষ্ট অবনতি। এমনকি চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নিতে যেতে দেওয়া হয়নি। মাটিতে ফেলে রাখা মাসুদ বারবার পানি পান করতে চাইলেও খুনিরা ন্যূনতম সহানুভূতি দেখায়নি। পাষণ্ডরা মাটিতে ফেলে রেখেই মাসুদের মৃত্যু নিশ্চিত করে।’
নাছিম বলেন, ‘এটাকে অনেকে গণপিটুনি হিসেবে অভিহিত করার চেষ্টা করছেন। অথচ এটা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যাকাণ্ড। যে কারণে পানি পান করতে না দিয়ে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। সুতরাং, সকলের প্রতি আহ্বান জানাই রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই হত্যাকাণ্ডকে ছাত্র-জনতার হাতে মৃত্যু বা গণপিটুনিতে মৃত্যু হিসেবে অভিহিত না করার। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে দেশি, বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নীরবতাও দুঃখজনক। মানবাধিকার রক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অতীতের ন্যায় তাদের সরব ভূমিকা আশা করছি।’
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দলটির নেতারা আত্মগোপনে আছেন। এরপর দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দীন নাছিম গণমাধ্যমে একাধিক বিবৃতি পাঠান। যদিও এসব বিবৃতি অফিশিয়ালি না পাঠিয়ে তাঁর একাধিক অনুসারীর মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠানো হয়। মাসুদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে পাঠানো বিবৃতিটির ওপরে ৮ সেপ্টেম্বর লেখা হলেও সেটা পাঠানো হয় ৯ সেপ্টেম্বর সকালে।