পথে প্রান্তরে ডেস্ক: সালাত বা নামাজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে দ্বিতীয়। এটি অন্যতম ফরজ ইবাদত। পবিত্র কুরআনে ৮২ বার নামাজের কথা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তোমরা সালাত (নামাজ) পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে, তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ। (সুরা নিসা, আয়াত: ১০৩)।
তবে সালাত পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য নামাজের মধ্যে থাকা রোকনগুলো সঠিকভাবে আদায় করা জরুরি। উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আল্লাহ তা’য়ালা (বান্দার জন্য) ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি এ সালাতের জন্য ভালোভাবে অজু করবে, সঠিক সময়ে আদায় করবে এবং এর রুকু ও খুশুকে পরিপূর্ণরূপে করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে যে, তিনি তাকে ক্ষমা করে দেবেন। আর যে তা না করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা নেই। ইচ্ছা করলে তিনি ক্ষমা করে দিতে পারেন, আর ইচ্ছা করলে শাস্তিও দিতে পারেন। (মেশকাত, হাদিস: ৫৭০)
বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে অনেকেই তাড়াহুড়া করেন, যা মোটেও উচিত নয়। আবার অনেকে ঠিকভাবে রুকু-সিজদাহ করেন না। অথচ, সহিহ বুখারির হাদিসে এসেছে, হুযায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি তার রুকু-সিজদা পুরোপুরি আদায় করছিল না। সে যখন সালাত শেষ করলো তখন তাকে হুযায়ফা (রা.) বললেন, তোমার সালাত ঠিক হয়নি। হাদিসটি বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয় তিনি (হুযায়ফা) এ কথাও বলেছেন, (এ অবস্থায়) তোমার মৃত্যু হলে তা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর তরিকা অনুযায়ী হবে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৮২)
তবে মনে রাখতে হবে, তাড়াহুড়ায় নিষেধ থাকায় জামাতে সালাত আদায় করতে গিয়ে ঈমাম যেন সালাত অনেক দীর্ঘ না করেন। এ বিষয়ে একটি হাদিসে এসেছে, আবূ মাসউদ (রা.) বলেন, এক সাহাবী এসে বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ! আমি অমুকের কারণে ফজরের সালাতে অনুপস্থিত থাকি। তিনি জামাতে সালাতকে খুব দীর্ঘ করেন। আবূ মাসউদ (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নসিহত করতে গিয়ে সেদিনের ন্যায় এত বেশি রাগান্বিত আর কোনোদিন দেখিনি। তিনি (রাসুল সা.) বলেন, তোমাদের মধ্যে বিতৃষ্ণা সৃষ্টিকারী রয়েছে। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অন্য লোক নিয়ে সালাত আদায় করে, সে যেন সংক্ষেপ করে। কেননা, তাদের মধ্যে দুর্বল, বৃদ্ধ ও হাজতমন্দ লোকও থাকে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৬৭)