স্টাফ রিপোর্টার: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কৃষিপণ্যের দাম কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে চাঁদাবাজি এড়িয়ে কম খরচে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষিপণ্য পৌঁছে দিতে চালু করা হয়েছে বিশেষ ট্রেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে ছাড়ে এমনই এক ট্রেন। ঢাকায় পৌঁছাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের এই ট্রেনের পেছনে ব্যয় হয় প্রায় ৯ লাখ টাকা। অথচ আয় হয়েছে মাত্র ৩৬০ টাকা।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ৩৪৬ কিলোমিটার। এ দূরত্বে ট্রেন পরিবহনে খরচ হয় ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩২ টাকা। কিন্তু গতকাল প্রথম দিন রাজশাহী থেকে ট্রেনটিতে গেছে ডিমের ১৫০ কেজি ফাঁকা খাঁচি (ক্যারেট)। যা থেকে রেল কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করেছে ৩৬০ টাকা। অর্থাৎ এ দিনে লোকসান হয়েছে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৭২ টাকা।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, এই ট্রেনে সাধারণ লাগেজ ভ্যানের পাশাপাশি রেফ্রিজারেটেড লাগেজ ভ্যানের ব্যবস্থা রয়েছে। এর মাধ্যমে মাছ, মাংসসহ পচনশীল পণ্য পরিবহন করা যাবে। রহনপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি পণ্যের ভাড়া পড়বে ১ টাকা ৩০ পয়সা।
তবে কৃষকরা এতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ট্রাক-পিকআপের চেয়ে ট্রেনের ভাড়া কম। কিন্তু ট্রেনে পণ্য পরিবহন করতে কুলি খরচ, ফসলের মাঠ থেকে স্টেশন এবং স্টেশন থেকে মোকামের আলাদা পরিবহন খরচ পড়ে যাচ্ছে কেজিপ্রতি ৩ টাকার বেশি। অথচ সড়কপথে ট্রাকে মাল পরিবহন করতে কেজিপ্রতি দুই থেকে আড়াই টাকা খরচ পড়ে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পাইকারি কাঁচাবাজার সমিতির সভাপতি ফাইজুল ইসলাম বলেন, ট্রেনে অল্প খরচে সবজি পরিবহন করা গেলে অবশ্যই আমাদের জন্য ভালো হবে। তবে ট্রেনটি যে চালু হবে, সেটি আমরা জানি না। জানলে হয়তো কিছু মাল পাঠাতে পারতাম।
রেল কর্মকর্তাদের দাবি, যথেষ্ট প্রচার চালালেও ট্রেনে কৃষিপণ্য পরিবহনে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। তবে ভবিষ্যতে সাড়া মিলবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ এই ট্রেনটি সপ্তাহের মঙ্গলবার খুলনা থেকে ঢাকা, বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় থেকে ঢাকা এবং শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে রাজশাহী হয়ে ঢাকা রুটে চলাচল করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা কয়েক দিন ধরে তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারণা চালিয়েছি। কৃষি বিপণন ও কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমেও প্রচার করেছি। মূলত কৃষকদের সঙ্গে ঢাকার ব্যবসায়ীদের সমন্বয় নেই। পাশাপাশি কয়েক দিন ধরে আবহাওয়া ভালো নেই, তাই হয়তো কৃষক ফসল সংগ্রহ করতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদের সঙ্গে যদি ঢাকার ব্যবসায়ীদের সমন্বয় করা যায়, তবে এই ট্রেন সাড়া ফেলবে।