চাঁদপুর প্রতিনিধি: চাঁদপুরে এমভি আল বাখেরা জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় আসামি আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানকে সাত দিনের রিমান্ড দিয়েছেন জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালত। আজ বুধবার সন্ধ্যায় এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শরীফ মো. সায়েম। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বাগেরহাটের চিতলমারি এলাকা থেকে ইরফানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
বিকালে কুমিল্লা র্যাব-১১ চাঁদপুর নৌ-অঞ্চলের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে হস্তান্তর করা হয় ইরফানকে। ওই সময় নৌপুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান ইরফানকে বুঝে নেন। পরে ইরফানকে আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গেল মঙ্গলবার রাতে জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় জাহাজের মালিক মাহবুব মোর্শেদ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাইমচর হরিনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কালাম খাঁন বলেন, ‘রিমান্ডে আনার পর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।’
এদিকে, বুধবার বেলা ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর উপঅধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন জানান, বেতন-ভাতা ও ছুটি নিয়ে ক্ষোভের জেরে জাহাজের লস্কর ইরফান খুন করেছেন সাতজনকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরফান এ কথা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন। তবে ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনো কারণ কিংবা কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
র্যাব জানায়, ইরফান গত আট মাস ধরে এমবি বাখেরা জাহাজে চাকরিরত ছিলেন। জাহাজের মাস্টার কিবরিয়া বিনা কারণে রাগারাগি ও বিল ভাউচার একাকী ভোগ করার কারণে ইরফানের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই জেরে গত ২২ ডিসেম্বর রাতে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অজ্ঞান করা হয়। এরপরই জাহাজের মাস্টারকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন ইরফান। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে অন্যদেরও হত্যা করেন। পরে ২৩ তারিখ রাতে একটি নৌকায় করে আত্মগোপনে চলে যান।
গত ২৩ ডিসেম্বরই চাঁদপুরের হাইমচর থেকে আল বাখেরা জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে দুজন মারা যান। একমাত্র জীবিত জাহাজের কর্মচারী জুয়েলের দেওয়া তথ্য অনুসারে নিবিড় তদন্তে র্যাব গতকাল মঙ্গলবার রাতে বাগেরহাটের চিতলমারি থেকে ইরফানকে গ্রেপ্তার করে।