সেহরি ও ইফতারের পর ধূমপান করা যাবে কি না, এই প্রশ্নটি সাধারণত রোজাদারের মধ্যে অনেক আলোচনা সৃষ্টি করে থাকে। ইসলামিক রীতি অনুযায়ী, রোজা রাখার সময় দিনের বেলায় খাবার, পানি এবং অন্যান্য যেসব বিষয় রোজা ভঙ্গ করতে পারে, তা থেকে বিরত থাকতে হয়। সেহরি ও ইফতার সেসময় বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেহরির মাধ্যমে রোজার প্রস্তুতি এবং ইফতারের মাধ্যমে রোজা ভাঙার পর পুনরায় খাদ্য গ্রহণ করা হয়। তবে, অনেকেই প্রশ্ন করেন যে সেহরি ও ইফতার শেষে ধূমপান করার বিষয়টি কীভাবে ইসলামে দেখা হয় এবং তা কি রোজা ভঙ্গের কারণ হতে পারে।
ধূমপান একটি নিকোটিনযুক্ত বিষাক্ত পদার্থ, যা শরীরে প্রবেশ করলে বিভিন্ন শারীরিক ক্ষতি করতে পারে। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে, যখন রোজা রাখা হয়, তখন সমস্ত কিছু থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে, যা শরীরের ক্ষতি করতে পারে বা রোজা ভঙ্গ করতে পারে। ইসলামের মৌলিক নীতি অনুযায়ী, মুখে বা শরীরে কিছু প্রবাহিত করা যা রোজাকে ভঙ্গ করবে, তা নিষেধ। অতএব, সেহরি ও ইফতারের পর ধূমপান করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং এটি ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে অনুমোদিত নয়।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন যে ধূমপান শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, এবং সেহরি বা ইফতারের পর এটি স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ক্ষতির কারণ হতে পারে। পাশাপাশি, ধূমপান রোজা ভঙ্গের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, কারণ এটি শরীরের মধ্যে কোনো উপাদান প্রবাহিত করে না, তবে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই, অনেক ইসলামিক স্কলার মনে করেন যে ধূমপান রোজা ভঙ্গ করে না, কিন্তু এটি স্বাস্থ্যসম্মত নয় এবং পরবর্তীতে এটিকে পরিহার করতে পরামর্শ দেন।
এছাড়া, রোজার মূল উদ্দেশ্য হলো আত্মসংযম এবং শুদ্ধতা অর্জন করা, আর ধূমপান সেই উদ্দেশ্যের বিপরীত কাজ করে, কারণ এটি মানুষের শারীরিক এবং মানসিক অবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলে, ইসলামের শিক্ষা অনুসারে, সেহরি ও ইফতার শেষে ধূমপান না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি শুধু রোজার জন্য নয়, বরং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনেকে মনে করেন, সেহরি ও ইফতারের পর ধূমপান করলে তা রোজার কোনো ক্ষতি করবে না, তবে ইসলামী আইন অনুযায়ী, রোজা ভঙ্গের মতো কোনো কিছু থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। রোজা ভঙ্গের প্রধান উদ্দেশ্য হলো আত্মবিশ্লেষণ এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ, আর ধূমপান সেই আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এজন্য, সেহরি এবং ইফতার পরবর্তী সময়টিকে ধূমপান থেকে বিরত থাকার সময় হিসেবে গণ্য করা উচিত, যাতে স্বাস্থ্য এবং ধর্মীয় বিধান উভয়ই সুরক্ষিত থাকে।