ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও মজবুত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। রমজান ও ঈদের সময় মার্কেট এবং শপিংমলগুলো রাত পর্যন্ত খোলা থাকার কারণে পুলিশি নিরাপত্তা কার্যক্রমে স্বল্পতা দেখা দেয়। এই সংকট মোকাবেলা করতে, ডিএমপি বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে ‘অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স’ হিসেবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের নিয়োগ দিয়েছে। এই নিরাপত্তাকর্মীরা আইনগতভাবে পুলিশের দায়িত্ব পালন করবে এবং তাদের গ্রেফতার করার ক্ষমতাও থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রমজান মাসে সন্ধ্যার পর মুসল্লিরা মসজিদে চলে যান, ফলে শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে জনশূন্যতা দেখা দেয়। বিশেষত তারাবির নামাজের সময়ে পুরুষদের বেশিরভাগই মসজিদে থাকেন, যা বাড়ি ও দোকানপাটের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করে। এ কারণে তিনি সবাইকে বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিজ দায়িত্বে করে যেতে অনুরোধ করেন। তিনি আরও বলেন, পুলিশ বাহিনীর জনবল সংকট থাকায় অনেকেই ছুটিতে আছেন, তাই নিরাপত্তা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, শপিংমল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের ‘অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব নিরাপত্তাকর্মীরা আইনি সুরক্ষা পেয়ে পুলিশের দায়িত্ব পালন করবেন এবং তাদের হাতে একটি ব্যান্ড থাকবে, যাতে তারা সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে চিহ্নিত হবে। এই কর্মকর্তারা পুলিশের মতই গ্রেফতার করতে পারবেন এবং তাদের আইনি সুরক্ষা থাকবে।
এছাড়া, ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ঢাকার বিভিন্ন শপিং সেন্টার ও আবাসিক এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, কারণ এসব জায়গায় রাত পর্যন্ত ভিড় জমে থাকে। বিশেষত ঈদের সময়, যখন শপিংমলগুলোর কর্মকাণ্ড বাড়ে, তখন এই নতুন ব্যবস্থা খুবই কার্যকর হবে। তিনি জানান, এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঢাকা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও মজবুত হবে এবং সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক, যুগ্ম কমিশনার রবিউল ইসলাম, মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এবং রমনার ডিসি মাসুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ডিএমপি সরকারী পুলিশের স্বল্পতার মাঝে ঢাকা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে, যা অনেকটা সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে।
