জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে নাহিদ ইসলামের প্রতিক্রিয়া

৯০ দিনের মধ্যে আছিয়া হত্যার বিচারের রায় কার্যকর দেখতে চাই: জামায়াত আমির Icon মাগুরা প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম 2 Shares facebook sharing buttonmessenger sharing buttontwitter sharing buttonwhatsapp sharing buttonprint sharing button ৯০ দিনের মধ্যে আছিয়া হত্যার বিচারের রায় কার্যকর দেখতে চাই: জামায়াত আমির আরও পড়ুন গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার চান নাহিদ বিএনপির কেউ হুমকি দিলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা: ইলিয়াসপত্নী জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে কী কথা হলো, জানাল জামায়াত ‘আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজড’ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন মির্জা ফখরুল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা ৯০ দিনের মধ্যে মাগুরার শিশুটির হত্যাকারীদের শুধু দ্রুত বিচারই নয়, বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে সেটিও দেখতে চাই। তিনি বলেন, অনেকে এক সপ্তাহ দাবি করলেও দেশের আইনে সেটি সম্ভব হবে না। তাই আমরা ৯০ দিন বলেছি। কিন্তু ৯১ দিন দেখতে চাই না। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সোনাইকুন্ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শিশু আছিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ড. শফিকুর বলেন, ঘরে ঘরে অপসংস্কৃতি এবং নির্লজ্জতা ছড়িয়ে পড়েছে। মেগা সিরিয়াল আর শর্ট ফিল্ম এ দুটির মাধ্যমে আমাদের গোটা সংস্কৃতি, সামাজিকতা, পারিবারিক বন্ধন, সবকিছুকে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। যে শিশুটি লাঞ্ছিত হলো, সারা দেশ যার কারণে আজকে লজ্জিত, তার আপনজনেরাই তার সেই সর্বনাশ করেছে। মানুষকে পশুর স্তরে নামিয়ে এনেছে এই সংস্কৃতি। অভ্যন্তরীণ হোক, আঞ্চলিক হোক, আন্তর্জাতিক হোক-এই নোংরা সংস্কৃতি বন্ধ হোক, আমরা চাই। জামায়াত আমির এর আগে সকাল ১০টার দিকে সোনাইকুণ্ডি গ্রামে শিশুটির কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন। এ সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সমাজে যত ভয়ংকর অপরাধ সংগঠিত হবে আপনারা সেটি তুলে ধরুন। সত্যকে সত্য, সাদাকে সাদা হিসেবে তুলে ধরবেন এবং কালোদের চেহারা সমাজের সামনে খুলে দেবেন। যাতে তাদের শাস্তি নিশ্চিত হয়, সমাজ ওদের ঘৃণা করে, বয়কট করে সেটিই আমাদের প্রত্যাশা। দেশে চলমান সাম্প্রতিক মব জাস্টিস সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. শফিকুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঘটনা পাবলিককে তাদের আবেগ, মতামতকে প্রভাবিত করে। কিন্তু তাদেরকে ধৈর্য্য ধারণ করতে বলি। বিচারবহির্ভূত কিছু আমরা চাই না। মব জাস্টিস যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। আমরা কোনো মব জাস্টিসকে সমর্থন করি না। স্কুল মাঠের দোয়া অনুষ্ঠান শেষে আমিরে জামায়াত শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে শিশুটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং খোঁজখবর নেন। যেকোনো পরিস্থিতিতে পরিবারটির জন্যে সহযোগিতার দ্বার উন্মুক্ত রয়েছে এবং যাতে স্বচ্ছলভাবে চলতে পারে তার পুরো দায়িত্ব নিতে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। জামায়াত আমিরের মাগুরা সফরকালে সাবেক এমপি ড. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হুসাইন, মাগুরা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক এমবি বাকেরসহ অন্য নেতারা সঙ্গে ছিলেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে দলটির সংস্কার-সংক্রান্ত অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, রাজনৈতিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে।”

শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “সংস্কারের মূল কাঠামো বর্তমান সরকারের আমলেই গড়ে তুলতে হবে। সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন ফলপ্রসূ হবে না। এ ছাড়া, সংবিধান ও গণপরিষদের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিও বৈঠকে উপস্থাপন করেছি।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “সংস্কার ও নির্বাচনের রূপরেখা নির্ধারণ করা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে জাতিসংঘ মনে করে। এ দেশের জনগণকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে জাতিসংঘ মহাসচিব আশা প্রকাশ করেছেন যে, বাংলাদেশে ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং আসন্ন নির্বাচন বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।”

বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, “আমরা রাজনৈতিক সংস্কার, সুষ্ঠু নির্বাচন, টেকসই গণতন্ত্র ও জাতীয় ঐক্য নিয়ে আলোচনা করেছি। জাতিসংঘ মহাসচিব আমাদের অধিকাংশ বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।”

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “গণহত্যা-সংক্রান্ত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে যে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য সংস্থাটির সহযোগিতা প্রয়োজন। এখনো জাতিসংঘের তিনটি সংস্থায় শেখ হাসিনার আত্মীয়রা কর্মরত আছেন।”

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, “আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে জুলাই গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্যের অবস্থানও তুলে ধরা হয়েছে।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ