কৃষি ডেস্ক: মরিচ আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় মসলা জাতীয় ফসল। তরকারিকে সুস্বাদু করতে মরিচ ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়া ঝাল হিসেবে নানান খাবারে এর ব্যবহার হয়। কাঁচামরিচে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি আছে। এর বাজারমূল্যও ভাল। তাই আজ জেনে নেবো কখন চাষ করতে হবে এই মরিচ।
উপযুক্ত মাটি
মরিচ চাষ করতে হলে প্রথমেই উপযুক্ত মাটি বা জমি নির্বাচন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রচুর আলো-বাতাস এবং সেচ ও নিকাশের ব্যবস্থা আছে, এমন দোআঁশ মাটি মরিচ চাষের জন্য উপযোগী।
বপনের সময়
শীতকালের জন্য ভাদ্র-আশ্বিন মাসে এবং বর্ষাকালের জন্য ফাল্গুন-চৈত্র মাসে বীজ বপন করা হয়। খরিফ-১ মৌসুমে ১-৩০ ফাল্গুন (১৫ ফেব্রুয়ারি-১৫ মার্চ)। খরিফ-২ মৌসুমে শ্রাবণ-ভাদ্র (১৫ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর)। রবি মৌসুমে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর উপযুক্ত সময়। জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে আগাছা বাছাই করে ৩x১ মিটার আকারের বীজতলা করে সেখানে বীজ বপন করা হয়। জাতভেদে শতকপ্রতি ১০-১৫ গ্রাম বীজ বপন করতে হবে।
চাষপদ্ধতি
মাটির প্রকারভেদে ৪-৬টি চাষ ও মই দিতে হবে। প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার। সেচের জন্য ১২ ইঞ্চি প্রশস্ত নালা থাকবে। সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। চারা ১০ সেন্টিমিটার উঁচু হলে রোপণের উপযোগী হয়। লাইন থেকে লাইন ২৪-২৮ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ১২-১৬ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে।
আগাছা দমন
আগাছা দমনের জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার, বিশুদ্ধ বীজ ব্যবহার এবং পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে। ফসল বোনার ২৫-৩০ দিনের মধ্যে আগাছা বাছাই করতে হবে। সেচ দেওয়ার আগে আগাছা বাছাই করতে হবে।
আবহাওয়া ও দুর্যোগ
অতিবৃষ্টির কারণে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। রবি মৌসুমে নিম্ন তাপমাত্রা (১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে) থেকে চারা রক্ষার জন্য বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: পুঁইশাকের চারা তৈরি করবেন যেভাবে
ফলন
জাতভেদে শতকপ্রতি ফলন হয় ৪০-৫০ কেজি। মরিচ শুকানোর পর ছায়াযুক্ত স্থানে ঠান্ডা করতে হবে। বোটা যেন মরিচ থেকে আলাদা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণের ক্ষেত্রে টিনের পাত্র, পলিব্যাগ, মাটির পাত্র, ডুলি বা ছালার ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। দুই স্তরবিশিষ্ট পলিথিনের ব্যাগ ও টিনের পাত্রে পলিথিন দিয়ে মরিচ রাখলে রং ও গুণগত মান ভালো থাকে। সংরক্ষিত মরিচ মাঝে মাঝে রৌদ্রে দিতে হবে।