বিগত সংসদ নির্বাচনে সরকারী দলের ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৭দফা দাবী অবিলম্বে বাস্তবায়ন ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চিরতরে বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচী পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শুক্রবার (০৬ অক্টোবর) বিকাল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সড়ক প্রাঙ্গণে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল মহানগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
কর্মসূচীতে বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বর্তমান সরকারি দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সবগুলো সংবিধান স্বীকৃত, যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত অধিকার। সংসদের আগামী অধিবেশনে আইন করে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করে সংখ্যালঘু ও জাতিগত সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজমান হতাশা দূর করতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, দেবোত্তর বোর্ড গঠন ও দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন, পৃথক পৃথকভাবে হিন্দু , বৌদ্ধ , খ্রিস্টান ফাউন্ডেশন গঠন অত্যন্ত ন্যায়সংগত ও যৌক্তিক দাবী৷
বাংলাদেশে নির্বাচনের প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত হতে চললেও সরকার সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি একটিও বাস্তবায়ন করেনি। যার দরুন বাধ্য হয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রাস্তায় নেমে বিগত বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে এ আন্দোলন করছে৷
বক্তারা আরও বলেন, সংসদের আগামী অধিবেশনে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হলে আগামী ৪ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা দিবেন।
তাছাড়া বক্তারা বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত এ মানবাধিকার আন্দোলন চলবে এবং দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ঘরে ফিরে যাবে না।
এসময় নেতৃবৃন্দ, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ ফয়সাল বিপ্লব কর্তৃক এমপি মৃণাল কান্তি দাসকে সাম্প্রদায়িক ভাষায় গালিগালাজ করার, কুড়িগ্রামের স্বভাবকবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলার এবং ঝিনাইদাহ, নড়াইল ও গোপালগঞ্জে প্রতিমা ভাংচুরেরও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তাছাড়া নেতৃবৃন্দ প্রতিবছরের ন্যায় এবারও নারায়ণগঞ্জের লক্ষীনারায়ন কটন মিলের ভিতরে শান্তিপূর্ণভাবে ৮১তম শারদীয় দুর্গাপুজা উদযাপনের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানান। পাশাপাশি আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় যাতে কোনো ধরনের আপত্তিকর পরিস্থিতি তৈরী না হয় সেজন্য প্রশাসনসহ দেশের সবাইকে সতর্ক থাকারও আহবান জানান।
সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাসের সভাপতিত্বে ও মহানগর যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি এড. অঞ্জন দাসের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত মন্ডল,মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল, সাধারণ সম্পাদক নিমাই দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিচার্ড সৌরভ দেউরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দাস,রূপগঞ্জ উপজেলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রমাকান্ত সরকার, সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল শর্মা, সোনারগাঁ উপজেলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সহদেব দাস শিশির, মহানগর পুজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ আচার্য্য।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস,বন্দর উপজেলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি হরি সাহা, সহ সভাপতি নারায়ন বর্মন,জেলার নেতা অসিম বড়ুয়া, পিন্টু রায়, সুমন সাহা, শারদাঞ্জলী ফোরাম নারায়নগঞ্জ জেলার সভাপতি আশিষ দাস, সাধারন সম্পাদক উৎপল সাহা, জেলা যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি আনন্দ কুমার সেরাওগী সুমন, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক রিপন কর্মকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠুন দত্ত বিল্লু, ১৪ ওয়ার্ডের সভাপতি প্রণয় সিংহ, মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক অরুন দেবনাথ, বিপ্লব কুন্ডু, সহ সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার সাহা, অজয় সুত্রধর, বন্দরের সভাপতি তুলশী ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক জিতু দাস, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি সঞ্জয় পোদ্দার, ১৪ নং ওয়ার্ড সভাপতি পংকজ রায়, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত দাস, ১৫ নং ওয়ার্ড সভাপতি বিপ্লব ঘোষ মনা, সাধারণ সম্পাদক ভোলানাথ পোদ্দার, ১৮ নং ওয়ার্ড সভাপতি সমীর দেবনাথ, মহানগরের নেতা সত্যরঞ্জন দেবনাথ, গৌতম দত্ত, দুলাল সাহা, গোবিন্দ সাহা, বিজয় কৃষ্ণ সাহা, জয়ন্ত কুমার সাহা, বিশ্বজিৎ সাহা, লক্ষণ দাস, দশরথ দাস, তপন ঘোষ সাধু, তপন ধরসহ নেতৃবৃন্দ।