স্টাফ রিপোর্টার: হঠাৎ উদ্ভব হওয়া “বৈষম্যবিরোধী স্বাস্থ্য আন্দোলন” ও “স্বাস্থ্য সেবা সংস্কার পরিষদ” কে নিয়েই সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন। এরা কারা? এদের ব্যাকগ্রাউন্ড কী? অথবা টার্গেট-ই বা কী?
গত ১০ আগস্ট শনিবার, রাজধানীর সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র মিলনায়তনে এক সভা যেখানে একটি প্রিন্টেড ব্যানারে লেখা ছিল “বৈষম্যবিরোধী স্বাস্থ্য আন্দোলন”। ছাত্র জনতার বিপ্লবে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশে সেই সভায় মঞ্চে ডাকা হয়নি কোন ছাত্র কিম্বা আন্দোলন সংশ্লিষ্ট কাউকে, শুধুমাত্র পাশকৃত কয়েকজন চিকিৎসক মঞ্চে ছিলেন। এখানে মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিত করা হলেও তাদের কোন দাবি দাওয়া শুনতে চাওয়া হয়নি। এতে উপস্থিত মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এই সভার ডাক দিয়েছিলেন ভারতীয় কলকাতার শাড়ির ব্র্যান্ড পরমা ‘র মডেল, টিভি উপস্থাপিকা ও প্রথম আলো পত্রিকার মডেল ডা. তাজনুভা জেবিন। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীপন্থী স্বাচিপের ঘনিষ্ঠ “পোস্টগ্রাজুয়েট টেইনি চিকিৎসক পরিষদ” এর সভাপতি ডা. জাবির হোসেন, ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিস নামক স্বৈরাচারের তাঁবেদার গ্রুপের হাবিবুর রহমান সোহাগ, মোঃ হাবিবুর রহমান প্রমুখ । দুইদিনের সভার পর তারা একটা নতুন পরিষদ খুলেন, যার নাম “স্বাস্থ্য সেবা সংস্কার পরিষদ”। এদের সকলের গত দুইবছরের ফেসবুক পোস্টসমূহ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এরা সকলেই স্বাচিপের বিভিন্ন সময়ের সুবিধাভোগী শ্রেণী, যারা লোকদেখানো আন্দোলনের নামে স্বৈরাচারী সরকারের কাছ থেকে নানা সুবিধা নিলেও দাবি মোতাবেক ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা একটাকাও বাড়েনি!
মডেল তাজনুভার স্বামী ডা. মহিউদ্দিন আহমেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাঁদের উদ্দেশ্য আগামী মাসের পরবর্তী বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) নির্বাচন যেখানে হয়ত স্বাচিপ অংশগ্রহণ করবে না। এতে তারা কোন একটা ছদ্ম নামে নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়াল লক্ষে ‘’ডক্টরস জাস্টিস গ্রুপ’’ নামে সারাদেশে ১০০০ সদস্যের নেটওয়ার্ককে কাজে লাগানোর পায়তারা করছে। তবে ছাত্ররা যেহেতু বিএমএ মেম্বার নয়, তাই তাদের মাঠে নামালেও তাদের স্বার্থসংশ্লিস্ট কোন বিষয় এইমুহুর্তে চিন্তা করছেন না। ‘’বৈষম্যবিরোধী স্বাস্থ্যসেবা পরিষদ’’ নাম নিয়ে তারা সেটা করতে পারেন বলে সূত্র জানায়। চিকিৎসক মহিউদ্দিন নিজেও আওয়ামীলীগ এমপিদের চিকিৎসা নেবার হাসপাতাল বলে খ্যাত ‘’বিএসএইচ’’ এর একজন পরিচালক। তার সাথে আছেন আওয়ামীপন্থী উপাধ্যক্ষ আব্দুল হানিফ টাবলু, ডা. রোকন উদ্দিন, ডা. এস এ খান প্রমুখ।
এভাবে নামে বেনামে সক্রীয় এই চক্রটি ইতিমধ্যে কুটনৈতিকদের সাথে প্রধান উপদেষ্টার ব্রিফিং অনুষ্ঠানটি নস্যাতের চেষ্টা করেছিলো। এভাবে পেশাজীবীদের ছদ্মাবরণে নানা ভূঁইফোড় সংগঠন করে ছাত্রদের আন্দোলনে বিজয়ের পরবর্তী লক্ষ্য সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করতে চায় বলে মনে করছে সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ।