Search
Close this search box.

রাজধানীতে সালাম পার্টির ৩২ সদস্য গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার- রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দলের ৩২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। ঢাকার কোতোয়ালী, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে র‌্যাব-৩ এর একাধিক দলঅভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।  এ সময় তা‌দের কাছ    থে‌কে সুইচ গিয়ার, চাকু, ক্ষুর, এন্টিকাটার, কাঁচি, বেল্ড, মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র জব্দ করা হয়।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপু‌রে রাজধানীর টিকাটুলী‌তে র‌্যাব-৩ এর ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে আয়োজিত  সংবাদ স‌ম্মেল‌নে র‌্যাব-৩ এর অ‌ধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।

তিনি ব‌লেন, যেকোন উৎসবকে কেন্দ্র করে ছিনতাইকারী‌দের তৎপরতা বাড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে উদযাপিত একুশে বই মেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর লোকসমাগম হয়ে থাকে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ছিনতাইয়ের মাধ্যমে জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি করাই তাদের মূল লক্ষ্য। বেশ কিছুদিন যাবৎ বড় ধরনের ছিনতাইয়ের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক এ চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তৎপরতা চালিয়ে আসছিল। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ছিনতাই করারও পরিকল্পনা করে এই চক্রটি।

তি‌নি আরও ব‌লেন, সাধারণত এসব এলাকায় ছিনতাইকারী এই চক্রটির সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। এছাড়াও সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন অলি গলিতে ওঁৎ পেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করে না। এরা মাঝে মাঝে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে সালাম দেয় এবং কথার ছলে তার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এরপর সময় বুঝে সর্বশ্ব লুটে নেয়।

অ‌ধিনায়ক ব‌লেন, ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা যেসকল ব্যক্তির কাছ থেকে ছিনতাই করবে তাদেরকে আগে থেকে অনুসরণ করতে থাকে এবং অনুসরণকৃত ব্যক্তির সাথে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের কথা বলে থাকে।

একপর্যায়ে কথা বলতে বলতে ওই ব্যক্তিকে সুবিধামতো কোনো জায়গায় নিয়ে যায় এবং সেখানে ছিনতাইকারী চক্রের অন্য সদস্যরা উপস্থিত হয়। চক্রের একজন সদস্য উক্ত ব্যক্তির সঙ্গে বিতর্কে জড়ায় ও মারধর শুরু করে। লোকজন এগিয়ে আসলে বলে, নিজেদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এ মারামারি। ততক্ষণে ছিনতাইয়ের কাজটি তাদের চক্রের কেউ একজন সেরে ফেলে। এছাড়াও তারা ছিনতাইয়ের কাজে বিভিন্ন অভিনব কৌশল অবলম্বন করে থাকে এবং ছিনতাইয়ের কাজে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে। যখন কোন রিকশা অথবা সিএনজি আরোহী যাত্রীদেরকে টার্গেট করে তারা অন্য একটি রিকশা অথবা সিএনজি নিয়ে ওই ব্যক্তির পিছনে যেতে থাকে। ছিনতাইকারীদের সুবিধামত স্থানে পৌঁছে যাত্রীকে এবং চালককে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রিকশা ও সিএনজি যাত্রীর সর্বস্ব লুটে নেয়।

তি‌নি জানান, ছিনতাইকারীরা তাদের ছিনতাইকৃত অর্থ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের নেশা করে এবং কেউ কেউ জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। চক্রের সদস্যদের অধিকাংশেরই রাজধানীতে বসবাসের জন্য স্থায়ী কোন বাসস্থান নেই। তারা সবাই রাজধানীর বিভিন্ন বস্তিতে ভাসমান অবস্থায় বসবাস করে।

এ চক্রের সদস্যদের মধ্যে প্রায় সবার বিরুদ্ধে মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার ক‌রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও একই অপরাধে জড়ায়। গ্রেফতার  এই চক্রটির বেশ কয়েকজন সদস্যকে ইতোপূর্বেও র‌্যাব-৩ ‌গ্রেফতার   ক‌রে‌ছে। কারাভোগ করে মুক্তি পেয়ে আবারও ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পরে।

অধিনায়ক আরও উ‌ল্লেখ্য করেন, র‌্যাব-৩ গত ৬ মাসে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ৭৯টি অভিযান চালিয় ২৬৮ জনকে গ্রেফতার করে‌ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ